ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা’ হবে কি হবে না তা নির্ধারণ করবে জনগণ।’
তিনি বলেন, ‘আলোচনার টেবিল এবং আন্দোলন দুইটা যদি একই ইস্যুতে হয় তাহলে এটা স্ববিরোধিতা। কেউ বলছেন পিআর চাই, ঠিক আছে পিআর যদি চাইতেই হয় সেটা তো ডিসাইড করবে জনগণ। আমরা কে কয়টা রাস্তায় মিছিল করলাম, বিভাগীয় পর্যায়ে কে কয়টা সভা করলাম, হাজার দুই-তিনেক লোক নিয়ে মিছিল করলাম তাতে কি পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল?’
তিনি বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী ইশতেহারে আপনাদের দাবিগুলো উল্লেখ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ যদি আপনাদের পক্ষে রায় দেয়, ইশতেহারের পক্ষে রায় দেয়, আপনারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন। এটাই তো গণতান্ত্রিক রীতি।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অর্পণ আলোক সংঘের উদ্যোগে তারুণ্যের রাষ্ট্র চিন্তার তৃতীয় সংলাপ ‘মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এই মন্তব্য করেন।
‘সংকট সৃষ্টি না করার’ আহ্বান রেখে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি সকল রাজনৈতিক দল এবং দেশবাসীকে আহ্বান জানাব, আসুন আমরা আর কোন সংকটের সৃষ্টি না করি, আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি। আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে সেটাকে আমরা সমুন্নত রাখি এবং এটাকে শক্তিতে পরিণত করে ইনশাআল্লাহ আমরা গণতান্ত্রিক চর্চাকে অব্যাহত রাখতে পারবো এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে নির্মাণ করতে পারব।’
আলোচনার টেবিলেই নিষ্পত্তির কথা জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একেক রকমের দাবি নিয়ে আন্দোলনে যেতে পারেন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। আমরা বলছিলাম, যে বিষয়গুলো এখনো আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি হওয়ার অপেক্ষায়, সেজন্য অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার জন্য কি আপনারা রাস্তায় গেলেন? সেই চাপকে আবার বাতাস শূন্য করার জন্য আমাদেরকেও তো যেতে হবে হবে, রাস্তায় আন্দোলনে সেটা কি আমরা এখন চাই? আমরা আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি চাই।
‘কারণ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য আছি, আমরা এইটাকেই ধারণ করবো, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো জাতীয় ইস্যুতে, দেশের স্বার্থের ইস্যুতে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের ইস্যুতে, যেকোনো জাতীয় সংকটে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চায় আমাদের মধ্যে বাহাস হবে, মতভিন্নতা হবে, বহুমত পোষণ করব কিন্তু সেটার নিষ্পত্তি হবে আলোচনার টেবিলে।’
জবরদস্তি কিছু চাপানো সঠিক নয় উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কোন কোন দল কোন দাবি করতেই পারে। সেটা নিয়ে জাতির উপরে জবরদস্তি আরোপ করা সঠিক নয়। এখন এনসিপি দাবি করছে, গণপরিষদ এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনে একই সাথে করার, সেই বিষয়টা আলোচনার টেবিলে আছে। ওখানেই আলোচনা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যদি সবাই মিলে সম্মত হয়। যদি ঐকমত্য পোষণ হয়, সেটা হবে? যদি ঐকমত্য পোষণ না হয়। তাহলে যেভাবে প্রচলিত বিধি-বিধান সবাই সম্মত হবে সেভাবেই হবে। এখানে যেন আমরা পরস্পর জবরদস্তি না করি। যে পরিবর্তনগুলো আমরা সামনের দিনে আনতে চাচ্ছি সেটা রাতারাতি হবে না। সেটার জন্য সময় দরকার পর্যায়ক্রমে এভাবে যাওয়া দরকার, একটা গণতন্ত্রবিহীন অবস্থা থেকে আমরা যে জায়গায় আসতে পেরেছি ইনশাআল্লাহ এই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারব, আমরা শহীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব, আমরা জনপ্রত্যাশা পূরণ করতে পারব আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা আছে একটা বৈষম্যহীন সাম্যভিত্তিক ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সেই আকাঙ্ক্ষা আমরা পূরণ করতে পারব।’
অপর্ণ আলোক সংঘের সভানেত্রী বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক আবদুস সালাম, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র দলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম, এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।