জগলুল হায়দারের ছড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল

বাসস
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:৩৬ আপডেট: : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:৪৫
ছবি : বাসস

ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : 'ছাত্র জাগলে একুশ হয়/ছাত্র জাগলে নব্বই/ছাত্র জাগলে লেখা হয়/ইতিহাসের সব বই।'/ কিংবা ‘ষড়যন্ত্রের সঙ বুঝি না, দেশটা বুঝি পুরা, দেশের গায়ে হাত দিলে জাস্ট হাড্ডি করুম গুড়া।’

এমন অসংখ্য সময়োপযোগী ছড়া-পদ্য রচনা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনকে প্রাণিত করেছেন ছড়াকার জগলুল হায়দার। বিপ্লবী এসব সিম্বল রেখল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল্যবোধ বাস্তবায়নে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোড়ালো করতে হবে। আধিপত্যবাদী সাংস্কৃতিক মনোপলি ভাঙতে বাংলাদেশপন্থী মূল্যবোধ সম্পন্ন সাহিত্য- সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।

আজ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজিত “ছড়াকার জগলুল হায়দার নাগরিক সংবর্ধনা কমিটি” আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, জগলুল হায়দার শুধু একজন ছড়াকার নন, তিনি আমাদের সময়ের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। সাহসী কলম দিয়ে তিনি সমাজ-রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় সংকটের কথা সাহসিকতার সঙ্গে লিখে গেছেন। তাঁর ছড়া বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

জাতীয়তাবাদী লেখক ফোরামের সভাপতি কবি শাহীন রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি জাকির আবু জাফর, শিল্পী ও সাংবাদিক আমিরুল মোমেনীন মানিক, ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ ও কবি পলিয়ার ওয়াহিদ। তাঁরা বলেন, জগলুল হায়দারের ছড়া পাঠকের অন্তরে সরাসরি আঘাত হানে। তার লেখনীতে প্রতিবাদ, বিদ্রুপ ও হাস্যরস এক অনন্য মিশ্রণ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে তিনি যে সাহসের সঙ্গে কলম ধরেছেন, তা তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, জগলুল হায়দারের ছড়া শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এগুলো সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিচ্ছবি। তিনি নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন, ছড়া কেবল শিশুসাহিত্য নয়, এটি হতে পারে শক্তিশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদের হাতিয়ার।

সংবর্ধিত ছড়াকার জগলুল হায়দার ধন্যবাদ জ্ঞাপনে বলেন, এ সম্মান আমার একার নয়, এটি বাংলা ছড়ার জয়। ছড়া আজ শিশুতোষ পরিসর অতিক্রম করে বৃহত্তর সমাজ-সচেতনতার ভাষা হয়ে উঠেছে। আমি কৃতজ্ঞ যারা আমার লেখনীকে ভালোবেসেছেন এবং সাহস যুগিয়েছেন।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংবর্ধনা কমিটির সদস্য সচিব কবি আবিদ আজম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ কমিটির আহ্বায়ক ছড়াকার কাদের বাবু। অনুষ্ঠানে জগলুল হায়দারকে নিয়ে কাদের বাবু সম্পাদিত একটি সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কবি জামসেদ ওয়াজেদ, কবি সৈয়দ রনো, কবি ও সাংবাদিক প্রতীক ওমর, মোশফেকা নীপা, কবি তানজীনা ফেরদৌস, কবি মঈন মুনতাসীর, কবি জহিদ কাজী, কবি শিমুল পারভীন।

অনুষ্ঠানে সাহিত্যপ্রেমী, গবেষক, তরুণ লেখক এবং পাঠকসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সমবেত করতালিতে ভেসে যায় শামসুর রাহমান মিলনায়তন। নাগরিক সংবর্ধনার এ আয়োজন জগলুল হায়দারের সাহিত্য ভ্রমণের এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হয়ে থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
সাকিবের রেকর্ড ভাঙলেন লিটন
জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জামায়াতের আমিরের
রোহিঙ্গা সংকটকে আলোচনার কেন্দ্রে রাখতে সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আহ্বান
তরুণদের স্বপ্ন দেখালো খুলনার ‘এলিভেটপে বিটপা কনফারেন্স’
পূজামণ্ডপে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকর্মী গ্রেফতার
পিরোজপুরের ১৩ জেলে ভারতের কারাগারে : দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি স্বজনদের
বিজিএমইএ’র ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
কুয়াকাটায় প্লাস্টিক বর্জ্য রোধে সচেতনতা সেমিনার
১০