বাংলাদেশে খাদ্য অপচয় রোধে ডেনিশ দূতাবাসের ‘জিরো ফুড ওয়েস্ট লাঞ্চ’ কর্মসূচি

বাসস
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২৮
ছবি : ডেনিশ দূতাবাসের ফেসবুক পেইজ

ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশে খাদ্য অপচয় রোধে সচেতনতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে ডেনিশ দূতাবাস আজ ঢাকায় ‘জিরো ফুড ওয়েস্ট লাঞ্চ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। 

ডেনিশ দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও পরিবর্তনকারীদের’ একত্রিত করা হয়েছে, যাতে তারা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখেন এবং খাদ্য অপচয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন।

বিবৃতিতে বিভিন্ন গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, প্রতিদিন বাংলাদেশে আনুমানিক ১০ হাজার টন খাদ্য অপচয় হয়।

বিশ্বব্যাংকের ২০২৫ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি নষ্ট হয়। এতে বলা হয়, চাল, মাছ, ডাল ও আমের মতো প্রধান খাদ্যের ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত ভোক্তার প্লেটে পৌঁছানোর আগেই নষ্ট হয়ে যায়। এত সম্পদ নষ্ট, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং পৃথিবীতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠানে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার বলেন, খাদ্য অপচয় মানে সুযোগ হারানো। কৃষকরা আয়ের সুযোগ হারাচ্ছে, পরিবারগুলোকে বেশি দামে খাদ্য কিনতে হচ্ছে, আর আমাদের পৃথিবী এর খেসারত দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দূতাবাসের ‘জিরো ফুড ওয়েস্ট লাঞ্চ’ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো এটি দেখানো যে খাবারের অপচয় রোধ ও টেকসই জীবনযাপন এক সূত্রে গাঁথা।

দূতাবাসের খাদ্য ও কৃষি খাতের পরামর্শক মারিয়া স্টেইন নুডসেন বলেন, খাবার নষ্ট মানে ‘জীবিকা হারানো, পরিবারগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করা’।

তিনি বলেন, আজকের লাঞ্চের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে ‘আমরা মানুষের অভ্যাস নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করতে পারি এবং ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করতে পারি, যা একত্রে বড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জিরো ফুড ওয়েস্ট লাঞ্চ’ দূতাবাসের বৃহত্তর এসডিজি ফ্যাসিলিটির অংশ। এ কর্মসূচি স্থানীয় কণ্ঠস্বরকে সম্পৃক্ত করে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে (এসডিজি) সমর্থন করে।

এতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশ পুষ্টি যোগানোর পরিবর্তে অপচয় হয়ে যায়। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও অপচয় একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক চলতি বছরের জুন মাসে জানায়, বাংলাদেশে খাদ্য অপচয় দেশের মোট জিডিপির ৪ শতাংশেরও বেশি সমান এবং এটি দেশের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ১৩ শতাংশের জন্য দায়ী।

এছাড়া বিশ্বব্যাংকের মতে, খাবার নষ্টের কারণে বাংলাদেশের আবাদযোগ্য জমির এক-চতুর্থাংশের উৎপাদনশীলতা কমে যায়।

ব্রেটন উডস ইনস্টিটিউশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যে অঞ্চলে (দক্ষিণ এশিয়া) এখনো লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে, সেই অঞ্চলেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খাদ্য ভোক্তার প্লেটে পৌঁছানোর আগেই নষ্ট হয়ে যায়। এটি উদ্বেগজনক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর এ অঞ্চলে উৎপাদিত খাদ্যের ৩০ শতাংশেরও বেশি নষ্ট  বা অপচয় হয়, যা প্রায় ৩০ কোটি মানুষকে খাওয়ানোর জন্য যথেষ্ট। জমি থেকে ভোক্তার প্লেট পর্যন্ত খাবার নষ্ট ও অপচয় পুষ্টি চাহিদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, কৃষকের আয় কমায়, জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে এবং অর্থনীতি ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাকে চাপের মধ্যে ফেলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
দুর্গাপূজা উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর শুভেচ্ছা উপহার প্রদান
খুলনায় জাতীয় মহিলা সংস্থার উদ্যোগে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চেক বিতরণ
বাংলাদেশি যুবকদের দক্ষতা প্রশিক্ষণে সহায়তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করল কানাডা
সাবেক আইজিপি বেনজীরের ক্যাশিয়ার জসিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
বরিশালে নবনির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হস্তান্তর করল জাপান
চীনা রাষ্ট্রদূতের সাথে ডাকসু নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ
পূজামন্ডপের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে থাকবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রবাসীদের পোস্টাল ভোটিং প্রক্রিয়া প্রকাশ করেছে ইসি
বাংলাদেশকে সক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতিগত ধারাবাহিকতা ও বৈশ্বিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: সিপিএ চেয়ারম্যান
খুলনায় তৃণমূল নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ভাতার চেক বিতরণ
১০