অক্সিজেন সামিটে সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও শক্তিশালী সুশাসনের আহ্বান

বাসস
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৪৪

ঢাকা, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আইসিডিডিআর,বি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অক্সিজেন সামিট ২০২৫’ শীর্ষক সম্মেলনে আজ বক্তারা দেশের সকল পর্যায়ে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও শক্তিশালী সুশাসনের আহ্বান জানিয়েছেন। 

‘সবার জন্য নিরাপদ, সুলভ ও নির্ভরযোগ্য মেডিক্যাল অক্সিজেনের জাতীয় রোডম্যাপ’ প্রতিপাদ্যে সম্মেলনে নীতিনির্ধারক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, ‘অক্সিজেন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এখনো ঘাটতি রয়েছে। তবে সরকার এটি দূর করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আমরা একটি জাতীয় অক্সিজেন নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা এবং অক্সিজেনকে অপরিহার্য ওষুধ হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।’

আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র বিজ্ঞানী (ইমেরিটাস) ড. শামস এল আরিফীন উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, অক্সিজেন প্রাপ্তি শুধু চিকিৎসা নয়, এটি একটি মানবাধিকার এবং জাতীয় অগ্রাধিকার।

ড. আহমেদ এহসানুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৩৭৩ মিলিয়ন মানুষের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল অক্সিজেন প্রয়োজন। এর মধ্যে ১০৫ মিলিয়ন তীব্র অসুস্থতার জন্য, ২৫৯ মিলিয়ন অস্ত্রোপচারের সময় এবং ৯ মিলিয়ন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্সিজেনকে ‘অপরিহার্য ওষুধ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে এর সহজলভ্যতা এখনো অপ্রতুল। বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অক্সিজেন ঘাটতি রোগীর যত্নে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।

আইসিডিডিআর,বি-র জরিপে দেখা গেছে, প্রেসার সুইং অ্যাডসর্পশন (পিএসএ), ভ্যাকিউম সুইং অ্যাডসর্পশন (ভিএসএ) এবং ভ্যাকিউম ইনসুলেটেড ইভাপোরেটর (ভিআইই) প্ল্যান্ট স্থাপনেও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, জনবল ও ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে। এতে অক্সিজেন পরিষেবার নির্ভরযোগ্যতা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

গবেষণায় একটি জাতীয় রোডম্যাপ প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়, যাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে— প্ল্যান্টের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বায়োমেডিকেল কর্মী তৈরি, বিকেন্দ্রীকৃত মেরামত সুবিধা এবং অক্সিজেনকে অপরিহার্য জনস্বাস্থ্য পরিষেবা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘অক্সিজেন উৎপাদনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তবে, সুষম ও টেকসই সরবরাহ নিশ্চিত করতে শক্তিশালী সুশাসন, সেক্টরসমূহের মধ্যে সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য। অক্সিজেন ব্যবস্থায় সুশাসন জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়।’

সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউনিসেফ, ইউএনওপিএস, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

তারা অক্সিজেন চাহিদা ও সরবরাহ, উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়া, নীতি ও বিনিয়োগের অগ্রাধিকার এবং টেকসই সমাধানের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। সমাপনী অধিবেশনে স্থানীয়ভাবে বিকশিত অক্সিজেন সরঞ্জাম যেমন বাবল সিপ্যাপ, অক্সিজেট, ভেন্টিলেটর এবং কম খরচের অক্সিজেন কনসেনট্রেটর প্রদর্শিত হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শিক্ষার্থী হত্যা : সাবেক ধামরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাদ্দেছসহ পাঁচজন রিমান্ডে
লড়াই করে হারল বাংলাদেশ
ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের সভাপতি পদে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বিজয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার অভিনন্দন 
গ্রিস উপকূলে নৌকাডুবিতে ৪ অভিবাসী নিহত
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাত : বাংলাদেশ-তুরস্ক সহযোগিতা আরও জোরদারের আহ্বান
বাংলাদেশ ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত
২০২৬ সালে বাংলাদেশে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প অর্থায়ন করতে পারে এডিবি
সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে নারী নেত্রী ও বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা চাইলেন সিইসি
রফতানিতে দেশীয় বীমা কোম্পানি ব্যবহারের অনুমতি দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
আবরার ফাহাদের শাহাদত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বড় প্রেরণা : তথ্য উপদেষ্টা
১০