ঝিনাইদহে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে নতুন সম্ভাবনা

বাসস
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:১৮
ছবি : বাসস

শাহজাহান নবীন

ঝিনাইদহ, ৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষামূলক তরমুজের আবাদ করে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক আব্দুর রহিম বাদশা। রসে টইটম্বুর তরমুজ দেখতে ক্ষেতে ভিড় করছেন অনেকেই। ফলের ফলন ও স্বাদে খুশি কৃষকসহ কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার সদর উপজেলার হলিধানী ব্লকে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের পাশের মাঠে তরমুজ চাষ করেন কৃষক আব্দুর রহিম বাদশা। নিজ উদ্যোগে বীজ সংগ্রহ করে ৫২ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এ ফলের বীজ রোপণ করা হয়। তরমুজ গাছের গোড়ার আর্দ্রতা বজায় রাখতে ব্যবহার করা হয় মালচিং পদ্ধতি। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে তৈরি করা হয়েছে মাচা। তাতেই ঝুলছে তরতাজা তরমুজ।

কৃষক আব্দুর রহিম বাদশা বাসস কে বলেন, ৫২ শতাংশ জমিতে ১১টি মাচা বা শেডে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে এ আবাদ করেছি। ক্ষেতে সবমিলিয়ে দুই হাজারের বেশি ফল ধরেছে। ফলের আকার, রঙ, স্বাদ ও মান অত্যন্ত ভালো।

তিনি আরও বলেন, একেকটি তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি হতে পারে। পরিপক্ব হলে এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু হবে। দুই মাসের পরিচর্যায় ফল ধরেছে। আর এক সপ্তাহ পরে ফল সংগ্রহ করা যাবে। ৫২ শতাংশ জমিতে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বাগানের সব ফল বিক্রি করে দিয়েছি। গড়ে আড়াই মাসে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ করা যায়।

এদিকে ব্যতিক্রমী তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টিম। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পরিদর্শন টিম তরমুজ ক্ষেতে আসেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ’ এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর (ডিএএম) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন’ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জোরদারকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প ডিপিপি'র সংস্থান অনুযায়ী চলমান কার্যক্রম পরিদর্শনের (মধ্যবর্তী মূল্যায়ন) লক্ষ্যে এ পরিদর্শন টিম তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের ফসল উইং, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম প্রধান ফেরদৌসী আখতার। আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফসল অনুবিভাগ, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপপ্রধান রত্না শারমীন ঝরা, সিনিয়র সহকারী প্রধান প্রিয়াংকা দেবী পাল।

এসময় পরিদর্শন টিমের সদস্যরা গ্রীষ্মকালীন তরমুজের বাম্পার ফলন দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পরিদর্শন টিমে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নূর এ নবী, সদর উপজেলার হলিধানী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর এ নবী বলেন, ব্যতিক্রমী গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে জেলায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমরা নিয়মিত কৃষকদের নানা ধরনের লাভজনক চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফসল উইং, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম প্রধান ফেরদৌসী আখতার বলেন, স্বল্পমেয়াদি ফসল হওয়ায় কৃষক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে আরো বেশি আগ্রহী হবে বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের চাষে কৃষককে সার্বিক সহযোগিতা দিতে সরকারি সব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা জরুরি : এ্যানি
ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির তাণ্ডবে ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামে ব্যাপক প্রাণহানি
ঢাবির শিক্ষার্থী সাম্য হত্যা মামলায় ৭ মাদক কারবারির বিরুদ্ধে চার্জশিট
বুলগেরিয়ায় পুলিশের তাড়ায় গাড়ি হ্রদে পড়ে ৬ অভিবাসী নিহত
খাগড়াছড়ি হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র, প্রয়োজন টেকসই পর্যটন নীতি
জাপানের শ্রম ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ বাংলাদেশের
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আজ হাসপাতালে ভর্তি ৪৮৮ জন  
মাগুরায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
নাটোরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
টাঙ্গাইলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
১০