বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিত করার আহ্বান

বাসস
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৭
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।

আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) আয়োজিত ‘বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানান বক্তারা।   

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহজাহান খানের সঞ্চালনায় আয়োজিত বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিজেডএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।

বৈঠকে বিএনপির সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) ড. আতিক মুজাহিদ ও আশরাফ উদ্দিন মাহদী, আপ বাংলাদেশের রাফে সালমান রিফাত , নেজামে ইসলাম পার্টির আবদুল মাজেদ আজহারী ও মুফতী মুখলিসুর রহমান কাসেমী, ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক ফাতেমা তাসনীম জুমা, ডাকসু সদস্য আনাস ইবনে মুনির, রাওয়া ক্লাবের কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল হকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, সংবিধানের মূল অঙ্গীকার ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। বাস্তবতায় দেশে অর্থনৈতিক-বৈষম্য উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে।

মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, দেশের বিত্তবান ১০ শতাংশ মানুষ যেখানে মোট সম্পদের ৫৮.৫ শতাংশের মালিক, সেখানে কম সম্পদশালী ৫০ শতাংশ মানুষের মালিকানা মাত্র ৪.৮ শতাংশ। জাতীয় আয়ের ক্ষেত্রেও একই বৈষম্য বিরাজমান-উচ্চ আয়ের ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী আয়ের প্রায় ৩৮.৫০ শতাংশের মালিক, বিপরীতে নিম্ন আয়ের ১০ শতাংশ মানুষের আয়ের অংশ মাত্র ১.৩১ শতাংশ।

বক্তারা দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, ঋণ খেলাপি, অর্থপাচার, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না পাওয়া ও শহরমুখী বিনিয়োগ প্রবণতাকে বৈষম্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, প্রায় ২০টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দারিদ্র্য হ্রাসে অবদান রাখলেও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমছে না।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ কমে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকায় দাঁড়ানো এবং জিডিপির প্রকৃত ব্যয় মাত্র ১.৩২ শতাংশ হওয়াকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসেবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বরাদ্দ কাঠামোয় সংস্কার জরুরি।

বক্তারা আরও বলেন, ২০২২ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর কমপক্ষে ১ লাখ কোটি টাকা জাকাত সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে। জাকাত, ওয়াকফ, সাদাকা প্রভৃতি ইসলামী সামাজিক অর্থায়নকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় সুশৃঙ্খলভাবে যুক্ত করলে বৈষম্য নিরসনে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তারা বলেন, বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা শুধু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নয়, এটি একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার। সংবিধানের মূল চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে জরুরি ভিত্তিতে নীতি ও কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে এনবিআর-এর সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, বুয়েটের অধ্যাপক ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে থানায় বিস্ফোরণে নিহত ৯
চীনা বিনিয়োগ কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক রপ্তানি কেন্দ্র হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের
নির্বাচন ব্যাহত করতে গুপ্ত শক্তির অপচেষ্টা চলছে : এ্যানি
রবিউলের তোপে প্রথম দিন অলআউট বরিশাল
বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ছাত্রদলের গণসংযোগ ও প্রচারণা মিছিল
মালয়েশিয়ায় পেনাং রোডশোতে বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর সম্ভাবনা প্রদর্শন
গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়
ব্যবসায়ীর ২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার : মূলহোতাসহ ২ জন রিমান্ডে
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
কোনো অপশক্তি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না : আইজিপি
১০