
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ রেলওয়ের ১২৫টি লাগেজ ভ্যান ক্রয় প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম, প্রতারণা ও রাষ্ট্রীয় অর্থের প্রায় ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে ছয়জন বর্তমান ও সাবেক রেল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭৭ক/১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে অতিরিক্ত প্রধান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ মাহবুব চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক মৃণাল কান্তি বনিক, প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মতিন চৌধুরী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. হারুন-অর-রশীদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান এবং সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামানকে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ‘লাগেজ ভ্যান ক্রয় প্রকল্পটি’ লাভজনক এবং বাস্তবসম্মত হিসেবে উপস্থাপন করেন। কিন্তু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, বাজার সমীক্ষা, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের চাহিদা এবং পরিবহন উপযোগিতা যথাযথভাবে পর্যালোচনা না করেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ডিপিপি তৈরি ও অনুমোদন করা হয়।
তদন্তে দেখা যায়, ২০১৮ সালে ৫০টি ব্রড গেজ ও ৭৫টি মিটার গেজ লাগেজ ভ্যান ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে প্রয়োজনীয় বাজার সমীক্ষা ও চাহিদা যাচাই করা হয়নি। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় ৩২.৪৬ কোটি টাকা দেখানো হলেও ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে প্রকৃত আয় হয় মাত্র ৮.২৯ কোটি টাকা। হিসাব বিকৃতকরণ ও অবাস্তব আয় প্রক্ষেপণের কারণে ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয়কৃত ১২৫টি লাগেজ ভ্যান থেকে প্রত্যাশিত আয় আসেনি, ফলে রাষ্ট্রীয় বিপুল অর্থের ক্ষতি হয়েছে বলে দুদক তদন্তে উঠে আসে।