বাসস
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:১৫
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:২০

টি-টোয়েন্টি মুড থেকে ওয়ানডে স্টাইলে খেলার দক্ষতা বাংলাদেশের আছে : সিমন্স

টাইগারদের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স - ফাইল ছবি

ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলেও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওয়ানডে স্টাইলে খেলার দক্ষতা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আছে বলে বিশ্বাস করেন টাইগারদের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। 

তিনি জানান, সবকিছুই মানসিকতার উপর নির্ভর করে। যা ৫০ ওভারের ফরম্যাটে পরিবর্তন করতে সহায়ক হতে পারে।

ক্রিকেট দলের অনুশীলন সেশনের আগে আজ সিমন্স বলেন, ‘আমি একমত যে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য এটি (বিপিএল টি-টোয়েন্টি) সেরা প্রস্তুতি নয়। তবে তারা সাদা বলের ক্রিকেটই খেলেছে, যার মানে দক্ষতার দিক থেকে তারা তীক্ষ্মই আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৬-৭ দিনের মধ্যে মানসিকতা ৫০ ওভারের ক্রিকেটের দিকে আনতে হবে। তাদের দক্ষতা আছে। তারা পারফর্ম করছে। এখন ৫০ ওভারের মানসিকতা আনাটাই মূল ব্যাপার।’

বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দলগুলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির জন্য ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

সিমন্স বলেন, ‘আগামী কয়েক দিন আমাদের ডাবল অনুশীলন সেশন হবে। আমরা সকালে ব্যাট-বোলিং করি এবং পরে সন্ধ্যায় আলোর নিচেও একই অনুশীলন। আমরা ৫০ ওভার ব্যাট করার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করছি।’

সিমন্স জানান, প্রাথমিক প্রস্তুতি দুবাইয়ের জন্য। আমরা যদি মানসিক দিক থেকে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছাতে পারি এবং দুবাইয়ের জন্য সঠিক কাজগুলো করতে পারি, তাহলে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করতে পারবো। 

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বিপিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেললেও, সেটার কোন প্রভাব বাংলাদেশ দলে পড়বে না বলে জানান সিমন্স। 

যত দ্রুত সম্ভব দলের খেলোয়াড়রা ওয়ানডে ফরম্যাটের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাসী সিমন্স। 

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত অনুশীলন ক্যাম্পে আমরা বিপিএলের কোন প্রভাব দেখিনি। খেলোয়াড়রা ৫০ ওভারের ফরম্যাটে উইকেটে লম্বা সময় ব্যাটিং এবং বোলিং করতে চাইছেন। আমি মনে করি না এটি তাদের কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে।’

যদিও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা স্কোয়াডের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই বিপিএলে ভালো করেছেন। চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল দলে থাকলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। 

বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, পারফরমেন্সের কারণে নয় কম্বিনেশনের জন্য একাদশে রাখা হয়নি শান্তকে। বরিশালের হয়ে পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৫৬ রান করেন শান্ত। 

সিমন্স জানান, মানসিকভাবে শক্তিশালী শান্ত। যা তাকে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ভালো করতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, ‘একাদশের বাইরে থাকাকালে সে (শান্ত) কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমাদের দলের প্রত্যেকের কাছ থেকে দৃঢ় মানসিকতা প্রয়োজন। আমি মনে করি সে (শান্ত) মানসিকভাবে শক্ত আছে। তাই আমি তার কাজ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’

তরুণ পেসার নাহিদ রানাকে নিয়ে কথা বলেছেন সিমন্স। তিনি জানান, বিপিএলের পর কিছুটা বিশ্রাম তাকে সেরা ছন্দে ফেরাতে সহায়তা করবে। ধারাবাহিক ম্যাচ খেলার পর যা সাধারণত হারিয়ে যায়। 

সিমন্স বলেন, ‘গত কয়েক ম্যাচে স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর গতির মনে হয়েছে রানাকে। এমনকি উইকেটের কাছাকাছি এসেও রান আপ স্বাভাবিক ছিলো না। তারা (রানার দল রংপুর) আগেই বাদ পড়েছে। তাই সে কিছুটা বিশ্রাম পেয়েছে। গতকাল অনুশীলনে তাকে সতেজ  মনে হয়েছে। গতি ফিরে আসছে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেমন ছিল, রান আপও তেমন গতিময় ছিল।’

২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত আইসিসির টুর্নামেন্টে এটাই সেরা সাফল্য টাইগারদের।
সিমন্স মনে করেন, সেরাটা দিতে পারলে এবারও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো করার সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের।

তিনি বলেন, ‘যদি বিশ্বাস না করতাম, তাহলে এখানে থাকতাম না। আমি মনে করি, আপনি যেকোন টুর্নামেন্টেই যান না কেন, নিজের সেরা প্রস্তুতি নিয়ে নিজের সেরাটা খেলতে চাইবেন। সব সময়ই আমি এটাই করতে চাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ওয়ানডে সিরিজ ভালো না হলেও আমরা শেষটা ভালো করেছি। আমি মনে করি আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে, যদি সামর্থ্যরে সব উজার করে দিতে পারি।’

ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের সাথে ‘এ’ গ্রুপে আছে বাংলাদেশ। ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মিশন শুরু করবে টাইগাররা। এরপর ২৪ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড এবং স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দু’টি ম্যাচই রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত হবে।