ঢাকা, ১৬ জুন ২০২৫ ( বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। তারা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে যদি কেউ প্রশ্ন করে, তুমি কি চাও? তারা বলবে, আমরা ভোট দিতে চাই। না খেয়ে থাকলে অসুবিধা নেই। ভোট এ দেশের মানুষের রক্তের সাথে মিশে আছে।’
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. মঈন খান এসব কথা বলেন।
এর আগে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বাধীন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
বিএনপি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটি ও চেয়ারপার্সনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ড. আবদুল মঈন খান জানান, সারাহ কুকের সঙ্গে দেশের চলমান অবস্থা, রাজনীতি, শিক্ষা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতাসহ সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চায় তা নিয়ে তিনি নিজের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার ।
নির্বাচন নিয়ে কী কথা হয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে চায়। নতুন প্রজন্ম যারা দীর্ঘ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, বাংলাদেশের কোটি-কোটি মানুষ ভোট দিতে চায়। কাজেই ভোটের ব্যাপারে একটা নিশ্চিত ইঙ্গিত যখন সরকারের পক্ষ থেকে আসে, যখন বলা হয় যে নির্বাচন কমিশন দেশবাসীকে ভোটের তারিখ জানাবে। তখন তো বাংলাদেশের মানুষ উচ্ছ্বসিত হয়। আমি আমার গ্রামের মানুষের উচ্ছ্বাস দেখেছি। আমার মনে হয় সারা বাংলাদেশে একই অবস্থা।’
বাংলাদেশের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে চায় উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটা উৎসব। আমরা যেমন ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের উৎসব করি, বাংলাদেশের মানুষের কাছে কিন্তু ভোটের দিনটি একই রকম। একটি উৎসব। কাজেই তারা উন্মুখ হয়ে আছে কখন ভোট দেবে। কখন তাদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করবে।’
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে দেশের জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে, এটাই হচ্ছে আলোচনার বিষয়। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যখন পুরোপুরি একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে তখন দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার থাকবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার থাকবে তখন যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভবিষ্যতে আমরা কোন-কোন বিষয়ে ও কার্যক্রম জোরদার করতে পারি সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আপনাদের কোনো দাবি থাকবে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো কিন্তু দাবির বিষয় নয়। দাবি করবে, দাবি মেটাবে। আমার মনে হয়, এই চক্র থেকে বাংলাদেশকে বের হয়ে আসতে হবে। যেটাকে বলা হয় দাবি দাওয়া একটা রিকন্সিলিয়েটরি অ্যাপ্রোচ। যেটাকে বলা হয় পারস্পরিক সমঝোতার একটা মানসিকতা। সেখানে ফিরে যেতে হবে।
ড. মঈন খান বলেন, গত ১৩ জুনের পর থেকে বাংলাদেশের একটা গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। যে যে কথাই বলুক না কেন। মানুষ এখন উৎসাহী, সামনের দিকে তাকাচ্ছে। মানুষ এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করছে, দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
গণতন্ত্রের জন্যই বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, একাত্তরে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল। আমাদের গণতন্ত্র প্রয়োজন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করতে হবে। শক্তিশালী করতে হবে। যাতে মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা নিয়ে নিয়ে মঈন খান বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে এটার উদ্ভব কিন্তু সেই গাজা উপত্যকা থেকেই। ইরান এবং ইসরাইলের সর্বশেষ যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে এটা বিশ্ব শান্তির জন্য একটা বড় হুমকি। আমাদের একটাই কথা আমরা শান্তিপূর্ণ একটা সমাধান দেখতে চাই।’