ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস) : প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ফলে ডাচদের হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের সামনে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।
সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে।
প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে- ৮ ও ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথমবারের মত দ্বিপাক্ষীক সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দ্বিপাক্ষীক সিরিজে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। এর আগে ২০১২ সালে নেদারল্যান্ডসের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ১৩ বছর আগে ঐ সিরিজে পাওয়া জয়টি, এখনও বাংলাদেশের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের একমাত্র জয়।
সিরিজের দুই ম্যাচেই টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। দুই ম্যাচেই নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন বোলারার। নেদারল্যান্ডসকে বড় স্কোর করতে দেয়নি টাইগার বোলাররা। ফলে দুই ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে কোন চাপ অনুভব করেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। খুব সহজেই দলকে জয়ের বন্দরে নেন তারা।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান করে নেদারল্যান্ডস। ২৮ রানে ৪ উইকেট নেন তাসকিন। জবাবে অধিনায়ক লিটন দাসের হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩৯ বল বাকী রেখেই জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ২৯ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৫৪ রান করেন লিটন। তবে জয়ের নায়ক ছিলেন তাসকিন।
দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নেদারল্যান্ডসকে ১০৩ রানে গুটিয়ে দিতে বড় অবদান রাখেন নাসুম। এরপর ওপেনার তানজিদ হাসানের অনবদ্য হাফ-সেঞ্চুরির সুবাদে ৪১ বল বাকী থাকতে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। ৪০ বল খেলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৪ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন তানজিদ।
দ্বিতীয় ম্যাচের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন বলেন, ‘একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি সব সিরিজ জিততে চাই। কিন্তু সবসময় সেটি সম্ভব নয়। সাফল্যের সব কৃতিত্ব দলের খেলোয়াড়দের। বোলাররা খুব ভাল পারফর্ম করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে এখানে একটি ক্যাম্প করছি এবং অনুশীলনে তারা অনেক বেশি চেষ্টা করেছে। বোলাররা সত্যিই ভাল বোলিং করেছে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। এই উইকেটে কিভাবে বল করতে হয়, সেটি জানত বোলাররা। নিজেদের বৈচিত্র্য এবং সবকিছু দিয়ে ভাল বল করেছে তারা।’
আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য এই সিরিজ জয়কে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন লিটন। তিনি জানান, যেহেতু এশিয়া কাপের মঞ্চে ভাল পারফরমেন্স করার লক্ষ্য আছে দলের সেজন্য এই সিরিজ জয় দলকে আত্মবিশ্বাস যোগাবে।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জয়। কারণ আমরা এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা দিনে দিনে আমাদের দল প্রস্তুত করার চেষ্টা করব। এটা একটি ভালো লক্ষণ যে যারাই দলে আসবে তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে। দিনের শেষে জয় আসলেই সবকিছু ঠিকঠাক চলবে।’
উইনিং কম্বিনেশন ভেঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে পরিবর্তন এনেছিল বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলামের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান নাসুম ও তানজিম হাসান সাকিব। এশিয়া কাপের আগে দলের সবাইকে খেলার সুযোগ দিতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য তৃতীয় ম্যাচেও একাদশে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন লিটন।
সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ সফরের ইতি টানতে চায় নেদারল্যান্ডস।
বাংলাদেশ দল : লিটন কুমার (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও সাইফুদ্দিন।
নেদারল্যান্ডস দল : স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), নোয়াহ ক্রোয়েস, ম্যাক্স ও’দাউদ, বিক্রমজিত সিং, তেজা নিদামানুরু, সিকান্দার জুলফিকার, সেডরিক ডি ল্যাং, কাইল ক্লেইন, আরিয়ান দত্ত, পল ফন মেকেরেন, শারিজ আহমেদ, বেন ফ্লেচার, ড্যানিয়েল ডোরাম, সেবাস্টিয়ান ব্র্যাট, টিম প্রিঙ্গেল।