
ঢাকা, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস) : ব্যাটিং ব্যর্থতায় এক ম্যাচ বাকী থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৪ রানে হেরেছে টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ ১৬ রানে হেরেছিল স্বাগতিকরা। ফলে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ায়, সিরিজ হার নিশ্চিত হল বাংলাদেশের।
টানা চার দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের পর, অবশেষে হারের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। এ বছরের মে মাসে সর্বশেষ পাকিস্তান সফরে সিরিজ হেরেছিল টাইগাররা। এরপর শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে লিটন দাসের দল।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে বোলিং করতে নেমে দারুণ শুরুর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের করা ম্যাচের প্রথম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার ব্রান্ডন কিং। কিš‘ সেটি তালুবন্দি করতে পারেননি উইকেটরক্ষক ও অধিনায়ক লিটন দাস।
তবে প্রথম উইকেটের দেখা পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। জীবন পাওয়া কিংকে ১ রানে শিকার করেন তাসকিন।
ম্যাচের শুরুতে সতীর্থকে হারানোর ধাক্কা ভালভাবে সামাল দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক ওপেনার অ্যালিক আথানাজে ও অধিনায়ক শাই হোপ। মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫০ এবং ১০ ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে ৯৪ রান তুলেন তারা।
ইনিংসের দশম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন আথানাজে। এজন্য ৩০ বল খেলেন তিনি।
পরের ওভারে দলের ও জুটিতে শতরান পূর্ণ করেন আথানাজে ও হোপ। ঐ ওভারেই টি-টোয়েন্টিতে অষ্টম অর্ধশতকের দেখা পান হোপ। আথানাজের মতই ৩০ বল খেলেন তিনি।
দারুণ ব্যাটিংয়ে শতরানের জুটি গড়া আথানাজে ও হোপকে বি”িছন্ন করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। ১২তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার।
৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৫২ রান করা আথানাজেকে শিকারের পরের ডেলিভারিতে শেরফানে রাদারফোর্ডকে খালি হাতে বিদায় দেন নাসুম। প্রথম ম্যাচেও গোল্ডেন ডাক মেরেছিলেন রাদারফোর্ড।
জোড়া ধাক্কার পর ৬ রানের ব্যবধানে আরও ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এসময় ৩টি করে চার-ছক্কায় হোপ ৩৬ বলে ৫৫, রোভম্যান পাওয়েল ৩ ও জেসন হোল্ডার ৪ রানে আউট হন। এতে ১ উইকেটে ১০৬ থেকে ১১৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
উইকেট পতন ঠেকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা সচল করেন রোস্টন চেজ ও রোমারিও শেফার্ড। সপ্তম উইকেটে তাদের ২৭ বলে ২৬ রানের জুটিতে ১৯ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৪ রানে পৌঁছায় সফরকারীরা।
পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের করা শেষ ওভার থেকে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫ রান তুলতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওভারের প্রথম দুই বলে শেফার্ডকে ১৩ ও খারি পিয়েরেকে শূন্যতে থামান ফিজ।
ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হবার আগে ১ রান করেন আকিল হোসেন। এতে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রানের পুঁজি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন চেজ।
বল হাতে বাংলাদেশের মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া নাসুম ৩৫ রানে এবং রিশাদ ২০ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
১৫০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে সাবধানে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ২ ওভারে ৭ রান তুলে টাইগাররা। চতুর্থ ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফ হাসান। পেসার জেসন হোল্ডারের শিকার হবার আগে ৫ রান করেন সাইফ।
এরপর অধিনায়ক লিটনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এরমধ্যে লিটনের অবদান ছিল ১২ বলে ২১ রান।
উইকেটে সেট হয়ে অষ্টম ওভারে স্পিনার আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হন লিটন। একবার জীবন পেয়ে ৪ চারে ১৭ বলে ২৩ রান করেন তিনি।
৪৮ রানে লিটন ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন ওপেনার তানজিদ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। ২৮ বলে ৩৭ রান যোগ হবার পর বি”িছন্ন হন তারা। ১২ রানে পেসার শেফার্ডের শিকার হন হৃদয়।
এরপর তানজিদ ও জাকের আলির ৩০ বলে ৩২ রানের জুটিতে ১শ পার করে বাংলাদেশের রান। এই জুটিতে নবম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ৩৮ বল খেলা তানজিদ।
শেষ ৩ ওভারে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৩ রান দরকার পড়ে বাংলাদেশের। ১৮তম ওভারে ৭ রানের বিনিময়ে তানজিদ ও জাকেরকে ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেফার্ড। ৩টি করে চার-ছক্কায় তানজিদ ৪৮ বলে ৬১ এবং জাকের ২ চারে ১৮ বলে ১৭ রান করেন।
১৯তম ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫ রান তুলে বাংলাদেশ। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২১ রানের সমীকরণ পায় টাইগাররা। কিš‘ শেষ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬ রান তুলে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করে স্বাগতিকরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল ২২ রানে ও শেফার্ড ২৯ রানে ৩টি করে এবং হোল্ডার ২০ রানে ২ উইকেট নেন।
আগামী ৩১ অক্টোবর একই ভেন্যুতে সিরিজের ত...তীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।