বাসস
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৩

হবিগঞ্জের রেমা কালেঙ্গায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন

হবিগঞ্জ, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ‘পাহাড় টিলা হাওর বন, অভয়রাণ্য, চা বাগান হবিগঞ্জের পর্যটন’ এ জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঘিরে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল হবিগঞ্জের রেমা কালেঙ্গা বনাঞ্চল। শীত মৌসুমে পর্যটকদের বেশি আনাগোনা দেখা যায় এখানে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পর্যটকদের রেমা কালেঙ্গায় যেতে প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে।

সূত্রমতে-জেলার চুনারুঘাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে গাজীপুর ইউনিয়নের রাণীগাঁও এলাকায় এর অবস্থান। বনের ভিতরে পর্যটদের যাওয়ার জন্য টিকেট মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ৩০ টাকা।

রেমা কালেঙ্গা ছনিবাড়ি ও রশিদপুর বিটে ভাগ করা হয়েছে। উঁচু টিলা ও পাহাড় বেস্টিত পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে সবুজের সমারোহ।

ভারতের সীমান্তবর্তী রেমা কালেঙ্গার পাহাড়ের ভিতরে ১০ তলা উঁচু টাওয়ার থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও বনের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সহজেই ভারতের পাহাড় টিলা দেখতে পায় পর্যটকরা। পাশে রয়েছে নান্দনিক লেক। তবে গাইড ছাড়া বনের ভিতরে যাওয়া রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।

জীববৈচিত্র

এ বনে ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা, ১৭ প্রজাতির উভয়চর প্রাণি ১৮ প্রজাতির সাপ, ১৬৭ জাতের পাখি, ৩৭ জাতের স্তণ্যপায়ী প্রাণিও বিলুপ্ত প্রায় শকুন প্রজাতি রয়েছে। যদিও এখন শকুনের দেখা পাওয়া বিরল।

পর্যটকদের জন্য রয়েছে ইকো কটেজ। এক সঙ্গে অন্তত ৩০ জন পর্যটক সেখানে পাহাড়ের ভিতরে রাত যাপন করতে পারবে। রয়েছে খাওয়া সুযোগ সুবিধা। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভিতরে রয়েছে স্থানীয় একটি বিজিবি ক্যাম্প।

বিশেষ করে শীত মৌসুমে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য সেখানে যায় এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকে। রাস্তা সরু হওয়ার কারণে পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে দিন দিন।

রেমা কলেঙ্গায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি সরু। কোন বাস যোগে যাতায়াত করা যায় না। শুধুমাত্র সিএনজি অটোরিকশায় সেখানে যেতে হয়।

১৩ কিলোমিটার সড়কের ১ কিলোমিটার মাটির রাস্তা, যে কারণে মাইক্রোবাস কিংবা প্রাইভেটকার নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তবে বৃষ্টির সময়ে একেবারেই যাওয়া যায় না। যারা এখানে যায় তাদের বার বার আকর্ষণ করে প্রকৃতি ও অভয়ারণ্যকে।

ইকো কটেজের দায়িত্বে থাকা শিপন আহমেদ জানান, গ্রীষ্মের তুলনায় শীত মৌসুমে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এখানে বেশি আসে। আগে থাকার কোন ব্যবস্থা না থাকলেও বর্তমানে ইকো কটেজের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও পর্যটকরা এখানে থাকতে পারে এবং তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যে কোন পর্যটক একবার এখানে ঘুরে গেলে তিনি বার বার এখনে আসতে চাইবে কেননা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য দেখতে পারবে।

রেমা কালঙ্গা বনবিটের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: মাসুদুর রহমান বাসসকে জানান, মূলত যাতায়াত ব্যবস্থার ভালো সুযোগ না থাকার কারণে পর্যটকরা এখনে বেশি আসে না। তবে রেমা কালেঙ্গা বনাঞ্চল দেখতে খুবই আকর্ষণীয়, মনোরম । বনের ভিতরে গেলে পর্যটরা আর আসতে চায় না। মন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়।

মাত্র ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হলেও এখানে পর্যটকরা সহজেই আসতে পারবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার উপরে চিঠি লেখা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই এর সমাধান হবে এবং পর্যটকরা বেশি বেশি করে এখানে আসবে।