ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার এক সপ্তাহ আগেও ইউরোপীয় কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে একটি সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু ট্রাম্পের এই সর্বশেষ শুল্ক হুমকিতে ইইউ ‘অপ্রস্তুত’ হয়ে পড়েছে।
ব্রাসেলস থেকে এএফপি জানায়, তারা নেপথ্যে সমঝোতার কাঠামো ব্যাখ্যা করছিলেন, প্রধান ইইউ আলোচক মারোশ সেফকোভিচের ‘ব্যতিক্রমী’ কাজের প্রশংসা করছিলেন এবং সম্ভাব্য নতুন মার্কিন হুমকিকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না।
ট্রাম্প শনিবার হঠাৎ করেই ইউরোপকে জানিয়ে দেন, আগামী ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি না হলে ইউরোপীয় পণ্যে বর্তমান শুল্কের তিনগুণ পর্যন্ত আরোপ করা হবে, যা আলোচনার গতি ভেঙে দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগেই ইইউ কমিশন ও বড় অর্থনীতিগুলোকে বিষয়টি জানালেও অনেক দেশই ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকেই প্রথম খবরটি জানতে পারে।
গত সপ্তাহেও ইইউ বিশ্বাস করছিল যে ১০ শতাংশ মূল শুল্কের ভিত্তিতে সমঝোতা হবে, যেখানে বিমানসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো ছাড় পাবে।
ফিনল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী ভিলে টাভিও বলেন, ‘আমি কিছুটা অবাকই হয়েছি, কারণ সপ্তাহজুড়ে আমরা একটি কাঠামোগত চুক্তি নিয়ে আশাবাদী ছিলাম।’
তবে তিনি যোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মাঝেমধ্যেই এই ধরনের হঠাৎ ঘোষণায় যায়।’
হাঙ্গেরির উপ- বাণিজ্যমন্ত্রী লেভেন্তে মগ্যর বলেন, ‘আমরা অবাক হইনি, কারণ ট্রাম্প তার সব প্রধান অংশীদারদেরই এই ধরনের চিঠি পাঠাচ্ছেন।’
গত সপ্তাহে ট্রাম্প যখন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং আরও ১২টি দেশে ২৫ু৪০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন, তখনও ইইউ ধৈর্য ধরে রেখেছিল।
ইইউ মুখপাত্র ওলোফ গিল বুধবার বলেছিলেন, ‘আমাদের জানা মতে আমরা এমন কোনো চিঠি পাচ্ছি না।’
এমনকি শুক্রবারও গিল বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত চুক্তি সম্পন্ন করতে... দেখা যাক ওয়াশিংটনে আমাদের বন্ধুদের ঘুম ভাঙলে কী হয়।’
তবে জটিলতা দেখা দেয়, যখন মার্কিন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলেন কোনো চিঠি আসবে না, আবার অন্যরা বলেন ট্রাম্পের টেবিলে খসড়া চুক্তি প্রস্তুত আছে।
অনেকে আশা করছিলেন, সপ্তাহান্তেই একটি চুক্তি ঘোষণা করা হবে, যার বিস্তারিত পরে ১ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করা হবে।
ট্রাম্প প্রথমে ২০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন, পরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বলেছিলেন, পরে আলোচনার সুযোগ রেখে তা স্থগিত করেন।
তবে নতুন হুমকি আলোচনার রূপরেখা বদলে দেবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইইউ মন্ত্রীরা সোমবারও বলেছেন, ‘তারা এখনো আশা করছেন ১ আগস্টের মধ্যে একটি চুক্তি সম্ভব।’
শান্ত স্বভাবের আলোচক সেফকোভিচ আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং সমঝোতার পথকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’