চট্টগ্রাম, ২৫ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান (এনবিআর) মো. আব্দুর রহমান খান বলেছেন, চট্টগ্রামে আইসিডি বেইজড একটি নতুন কাস্টম হাউস গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আগামী আগস্ট মাসে এ বিষয়ে সরকারি আদেশ আসবে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বর্তমান ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন করা হবে। এই সময়ে চট্টগ্রামে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কয়েক বছরের জন্য কাস্টম হাউসের কার্যক্রম স্থানান্তর করা হবে।’
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কাস্টম কর্মকর্তা এবং অংশীজনদের সঙ্গে এক বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান এ সব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের জটিলতার কারণে এর ব্র্যান্ড ভ্যালু কমে গেছে। তাই আমরা নতুন মডার্ন টেকনোলজি আগামী দুই বছরের মধ্যে ডেভেলপ করব।’
বৈঠকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের প্রধান স্টেক হোল্ডার সিএন্ডএফ এজেন্টরা বন্দর, আইসিডি থেকে পণ্য খালাসে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান সৎ এবং ভালো ব্যবসায়ীদের সহায়তা করার আশ্বাস দেন।
শুল্কায়নে নতুন সফটওয়্যারের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা এ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম ব্যবহার না করে অন্যান্য যেসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে শুল্কায়ন করে আমরা সেসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে মডার্ন টেকনোলজি এনে আমরা নতুন সফটওয়্যার তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে কোনো অবস্থাতেই সফটওয়্যার স্লো না হয়। কাজের ব্যাঘাত না ঘটে। শুরুতে কয়েকটি শুল্ক স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রয়োগ করব। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অন্তত দুই বছর সময় লাগবে।’
আব্দুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা তিনটি আইকনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নতুন ভবন। এই ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। ভবন নির্মাণ শুরু হলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কার্যক্রম আগ্রবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে স্থানান্তর করা হবে। সব ব্যবসায়ীর আগ্রাবাদ বেইজড অফিস। সুতরায় কাস্টম হাউসের কার্যক্রম কয়েক বছরের জন্য স্থানান্তর হলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া কাস্টম একাডেমিতে নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। আগ্রাবাদে নির্মাণ করা হবে নতুন কর ভবন। শিগগিরই এই তিনটি ভবনের কাজ শুরু হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অফডককে জনপ্রিয় করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর চাচ্ছে বন্দর থেকে শতভাগ ডেলিভারি কার্যক্রম আইসিডি থেকে দেওয়ার জন্য। এটি নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের চাওয়া। প্রায় ৭ হাজার এইচএস কোডের পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র ৬৬ টি আইটেমের পণ্য ডিপো থেকে ডেলিভারি দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, অহেতুক ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা যাবে না। আমাদের মূল ফোকাস থাকবে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন। যারা কর ফাঁকি দিয়ে জনগণকে ঠকাবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব। ব্যবসায়ীরা যাতে বিড়ম্বনার শিকার না হয় সেটি হবে আমাদের মূল প্রতিপাদ্য।
এমপিদের আনা গাড়ির নিলাম প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা পানির দরে এসব গাড়ি বিক্রি করতে চাই না। নিলামে গাড়ির দাম না পেলে এর আরও ভালো ব্যবহার কীভাবে করা যায় সে ব্যাপারে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি।’
মতবিনিময় সভায় এনবিআর সদস্য মোয়াজ্জম হোসেন, কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, মুবিনুল কবির, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার শফি উদ্দিনসহ কাস্টম কর্মকর্তা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।