ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত উচ্চহারে শুল্ক এড়াতে ওয়াশিংটনকে একটি ‘প্যাকেজ চুক্তি’র প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। শুক্রবার দেশটির অর্থমন্ত্রী চোই স্যাং-মক একথা জানিয়েছেন। এই প্রস্তাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রস্তাবের ফলে আগামী সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে একটি বাণিজ্যিক সমঝোতার পথ খুলে যেতে পারে।
সিউল থেকে এএফপি এই সংবাদ জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান রপ্তানিকারক দেশ এবং স্যামসাং ইলেকট্রনিকস ও গাড়ি নির্মাতা হুন্দাইয়ের মতো শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ ট্রাম্পের পাল্টাপাল্টি শুল্ক কার্যকর হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
শুক্রবার কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওয়াশিংটনে অবস্থানরত দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী চোই স্যাং-মক এবং বাণিজ্যমন্ত্রী আহন ডুক গিউন বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে তারা ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিমালা’ নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া ‘জুলাই প্যাকেজ’ নামের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে, যার লক্ষ্য ট্রাম্পের ৯০ দিনের ‘পাল্টা’ শুল্ক স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এই শুল্ক তুলে দেওয়া।
ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী চোই স্যাং-মক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পারস্পরিক ও পণ্যভিত্তিক শুল্ক আরোপ করা হলে তা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এই বিষয়টি আমরা ব্যাখ্যা করেছি।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, কোরিয়ান রপ্তানির ওপর আরোপিত শুল্ক থেকে অব্যাহতি ও ছাড় দেওয়া উচিত।’
কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী চোই স্যাং-মক জানান, এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ গ্রিয়ারের সঙ্গে আরো আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। গ্রিয়ার আগামী ১৫ ও ১৬ মে সিউলে অনুষ্ঠেয় এপেক বাণিজ্য মন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিতে কোরিয়া সফর করবেন।
কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী আহন ডুক গিউন জানান, দুই দেশ ‘ভবিষ্যৎ পরামর্শের জন্য একটি কাঠামো গঠনে নীতিগতভাবে একমত’ হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোরিয়ার বৈঠক ছিল ‘খুবই সফল’ এবং তিনি মনে করছেন, তারা প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত এগোচ্ছে। আমরা সম্ভবত আগামী সপ্তাহ থেকেই কারিগরি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করব এবং একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব।’
তিনি আরো বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ারা খুব আগেভাগেই এগিয়ে এসেছে। তারা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে, এখন দেখা যাক তারা কীভাবে বিষয়টি এগিয়ে নেয়।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি আশানুরূপ না হয়ে ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, যার পেছনে রয়েছে শুল্ক-সংক্রান্ত উদ্বেগ ও সামরিক আইন জারির পর রাজনৈতিক অস্থিরতা।