সংস্কার পরিকল্পনার অধীনে ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে জাতিসংঘের হাজারো কর্মী

বাসস
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৩:৩০

ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (বাসস) : বাজেট ঘাটতির মুখে চলমান সংস্কার পরিকল্পনার অধীনে জাতিসংঘের নির্বাহী শাখায় ২০ শতাংশ পদ ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। এতে কয়েক হাজার ব্যক্তির চাকরি হারানোর 

আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার এএফপি’র হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে এ তথ্য জানা যায়।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তর থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাব নিয়ন্ত্রক চন্দ্রমৌলি রামানাথন চলতি সপ্তাহে বিভাগীয় প্রধানের উদ্দেশ্যে এক বার্তায় লেখেন, ‘২০২৬ সালের নিয়মিত বাজেট ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমানোর উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন মহাসচিব।’ এর মধ্যে সচিবালয়ের মোট পদের ২০ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রস্তাবও রয়েছে। 

২০২৫ সালের জাতিসংঘ বাজেট মোট ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার।

২০২৩ সালের শেষ নাগাদ জাতিসংঘের সচিবালয়ে প্রায় ৩৫,০০০ জন কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান অঙ্গগুলোর একটি এই সচিবালয়। এসব কর্মীদের অধিকাংশ নিউইয়র্কে কর্মরত। তবে জেনেভা, ভিয়েনা এবং নাইরোবিতেও অনেকে কাজ করেন।

গত মার্চ মাসে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের শুরু করা জাতিসংঘের ৮০তম সংস্কার উদ্যোগের আওতায় এই প্রস্তাব আনা হয়েছে। ব্যয় সংকোচন ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে সংস্থাটির কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করাই যার লক্ষ্য।

সম্প্রতি গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, এই সংস্কার প্রক্রিয়া ‘বেদনাদায়ক’ হতে পারে। সে সময়ই তিনি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

এএফপির হাতে আসা ২৭ মে তারিখের ওই স্মারকে জাতিসংঘের সব বিভাগীয় প্রধানকে আগামী ১৩ জুনের মধ্যে ছাঁটাইয়ের জন্য অপসারণযোগ্য পদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। এতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে বলা হয়, ‘অপ্রয়োজনীয়, একাধিকবারের পুনরাবৃত্তিমূলক বা গুরুত্বপূর্ণ নয়’ এমন দায়িত্ব ও পদের ওপর।

রামানাথান স্মারকে বলেন, ‘আমরা জানি সময় খুবই সীমিত, তবুও আমি আপনাদের সম্মিলিত সহযোগিতার ওপর নির্ভর করছি’।

সাধারণ পরিষদ যদি ২০২৬ সালের বাজেট অনুমোদন করে, তাহলে আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে শূন্য পদে ছাঁটাই কার্যকর হবে। আর কর্মরতদের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।

ওই নথিতে আরো বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিয়মিত বাজেট থেকে অর্থায়ন পাওয়া শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং  ইউএন উইমেন-এর মতো সংস্থাগুলোকে আলাদাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জাতিসংঘ বহু বছর ধরে তহবিল সংকটে ভুগছে। কারণ, অনেক সদস্য দেশ তাদের নির্ধারিত অনুদান সময়মতো বা পুরোপুরি পরিশোধ করে না।

জাতিসংঘের মোট বাজেটের ২২ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। কিন্তু তাদের ১৫০ কোটি বিলিয়ন ডলার অনুদান গত জানুয়ারি পর্যন্ত বকেয়া ছিল। 

অন্যদিকে দ্বিতীয় বৃহত্তম অবদানকারী দেশ চীন জাতিসংঘের মোট বাজেটের ২০ শতাংশ অর্থ প্রদান করে। 

কিন্তু ২০২৪ সালে তারাও বছর শেষে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে সব অর্থ পরিশোধ করেছিলো।

তারল্য সংকটের বাইরে, কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে জাতিসংঘের জন্য বরাদ্দ আরো কমতে পারে। 

মার্কিন বৈদেশিক সাহায্যে ব্যাপক কাটছাঁটের ফলে ইতোমধ্যে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ডাকসু প্রার্থী তালিকা প্রকাশ: বৈধ প্রার্থী ৪৬২ জন
যৌথ বাহিনী এক সপ্তাহের অভিযানে সারাদেশে আটক ৫৬
রাজধানীতে ডিএমপির বিশেষ অভিযানে ৬৫ জন গ্রেফতার
চট্টগ্রামে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু
সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিল: ফাওজুল কবির খান
এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি রোধে বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চার নির্দেশনা    
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর-সংস্থার গতিশীলতা দরকার : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব
সিলেটে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান, ৩ জনের কারাদণ্ড
জিলানীর শরীরে থেকে যাওয়া পিলেট অপসারণ করলেন রফিকুল ইসলাম
ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়ে রেকর্ড সংখ্যক আবেদন জমা পড়ছে
১০