ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী মাসের জি-৭ সম্মেলনের আগে আরো এক দফা আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ। শনিবার জাপান এ তথ্য জানিয়েছে।
টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এবং সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ জাপান। তবে বর্তমানে অধিকাংশ দেশের মতো ১০ শতাংশ মার্কিন শুল্কের আওতায় রয়েছে দেশটি। পাশাপাশি জাপানের গাড়ি, স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টোকিওর ওপর ২৪ শতাংশ ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। যদিও পরবর্তীতে তা জুলাইয়ের শুরুর দিক পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টোকিও সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের চেষ্টা করছে এবং এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে আলোচনার বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের অবস্থান সম্পর্কে পর্যাপ্ত বোঝাপড়ার জায়গায় পৌঁছেছে।
এদিকে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে আলোচনায় ‘আবারো যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ব্যবস্থাগুলো পুনর্বিবেচনার’ জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত রিওসেই আকাজাওয়া।
টোকিও জানায়, জুনের মাঝামাঝি সময়ে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আগেই আরেকবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ।
ওয়াশিংটনে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের আকাজাওয়া জানান, ‘আমি মার্কিন শুল্ক ব্যবস্থাগুলো অবিলম্বে পর্যালোচনার দাবি জানিয়েছি। যদি আলোচনা সে দিকেই এগোয়, তাহলে আমরা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব; তবে তা না হলে চুক্তিতে পৌঁছানো কঠিন হবে।’
জি-৭ সম্মেলনের আগেই একটি সমন্বিত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ জাপান। এটি উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো জোরালো করবে বলে আশা দেশটির।
অন্যদিকে, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বেসেন্ট আকাজাওয়াকে বলেছেন, ‘শুল্ক ও অ-শুল্ক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা, বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।’
এতে আরো বলা হয়, জাপানের সঙ্গে শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন বেসেন্ট।
বিশেষ করে ট্রাম্প আরোপিত ২৫ শতাংশ গাড়ি আমদানি শুল্ক জাপানের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে, কারণ দেশটির মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮ শতাংশ এই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে জাপান ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ০.২ শতাংশ হারে সংকোচনের মুখে পড়েছে। এতে করে জুলাইয়ের উচ্চকক্ষ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার ওপর রাজনৈতিক চাপ আরো বেড়েছে।