আগের আন্দোলনগুলো জুলাই অভ্যুত্থানের ভিত তৈরি করে দিয়েছিল: সাদিক কায়েম

বাসস
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৪:৫৭ আপডেট: : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৫:০৮
সাদিক কায়েম। ফাইল ছবি

জুবায়ের ইবনে কামাল

ঢাকা, ৫ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): জুলাই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ছাত্র পেছন থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সাদিক কায়েম তাদেরই একজন। পুরো আন্দোলনের শুরু থেকে সমন্বয়ক ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে আন্দোলনে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন তিনি। অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে আত্মপরিচয়ে সামনে এলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।

সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। তার বাবা জেলা শহরের একজন ব্যবসায়ী। তিনি খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদরাসা থেকে দাখিল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বহু আগে নবম শ্রেণিতে থাকা অবস্থাতেই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। সেসময় তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম ও গুম-খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজেকে সামিল করতে গিয়ে সঙ্গী আন্দোলনকারীকে খুনও হতে দেখেছেন তিনি। সেসময় থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রদের কতৃক সংগঠিত প্রায় সবগুলো আন্দোলনেই অংশ নিয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে হলে ওঠার পরই ছাত্র সংগঠন (বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত) ছাত্রলীগের দ্বারা জোরপূর্বক তাদের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিতে হয় তাকে। সেসময় এসব থেকে বিরত থাকতে হল থেকে বের হয়ে যান সাদিক। পরে অন্যান্য বিভাগের রাজনীতি সচেতন শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করেন, সেসময়ই তিনি পরিচিত হন মাহফুজ আলমের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বর্তমান তথ্য উপদেষ্টা) সঙ্গে। এছাড়াও সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে আগ্রহীদের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া তৈরি করেন, যেটি জুলাই অভ্যুত্থানে ইতিবাচকভাবে কাজে লেগেছিল।

সাদিক কায়েম জুলাই অভ্যুত্থানকালীন পেছনে থেকে বেশ কয়েকজন সমন্বয়ককে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করেন, যাদেরকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার হন্যে হয়ে খুঁজছিল। এছাড়াও আন্দোলন চলাকালে প্রতিরোধ গড়ে তোলা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটবিহীন সময়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পৌঁছে দেয়ার কাজও করেছেন তিনি। বাসসের বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাদিক কায়েম জানিয়েছেন সেসময়ের দিনগুলোর কথা।

বাসস: আপনি ভর্তি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ১৭ সালে। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনেকগুলো আন্দোলন হয়েছে। এই আন্দোলনগুলো কি চব্বিশের অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে বলে আপনি মনে করেন?

সাদিক কায়েম: অবশ্যই। শেষ কয়েক বছরের আন্দোলনগুলো এই অভ্যুত্থান পর্যন্ত আমাদের নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন, মোদী বিরোধী আন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি আন্দোলন আমাদের মধ্যে আজাদির আশা তৈরি করছিল। বিশেষ করে আবরার ফাহাদের শহীদ হওয়াটা আমরা কেউ ভুলতে পারি না। আমার ধারণা, আবরার ফাহাদ ভাইয়ের ঘটনা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের বুকে বিরাট ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। এসব আসলে আমাদেরকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিকেই অগ্রসর করছিল।

বাসস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর থেকেই কি আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে আপনার সংযোগ ঘটে?

সাদিক কায়েম: ঢাবি দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সংগ্রামের একটা কেন্দ্র বটে। কিন্তু এর বহু আগে থেকেই আসলে আমি এসবের সাথে যুক্ত ছিলাম। আমার মনে আছে, যখন ২০১৩-১৪ সাল। দেশজুড়ে ভয়াবহ রকমের সংঘর্ষ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আওয়ামী লীগও তাদের ফ্যাসিবাদী রূপ প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে প্রকাশ করতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ এককভাবে একটা নির্বাচন দিয়ে মানুষের লাশের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় গেছে, তখন আমি আন্দোলনে যোগ দিতাম।

একদিকে যেমন প্রহসনের নির্বাচন করছে আবার আরেকদিকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। তখন আমি খাগড়াছড়িতে, নিতান্তই ক্লাস নাইনে পড়ুয়া একটা বাচ্চা ছেলে। আমার মনে আছে খাগড়াছড়ির মতো একটা দুর্গম এলাকায় যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, আমি সবগুলোতে অংশ নিয়েছিলাম।

বাসস: খাগড়াছড়িতেও কি পুলিশি আক্রমণ হতো?

সাদিক কায়েম: আমার জীবনের প্রথম হামলার শিকার হয়েছিলাম সেবছরই খাগড়াছড়িতে। পুলিশ আমাকে লাঠি দিয়ে এমনভাবে মেরেছিল যে প্রায় দুই মাস আমি চলতে পারিনি। আমি অবাক হয়েছিলাম, নিতান্তই বাচ্চা ছেলেকেও তারা মারতে দ্বিধা করছে না।

বাসস: খাগড়াছড়িতে কতদিন ছিলেন?

সাদিক কায়েম: আমি দাখিল পরীক্ষা দেয়ার পর চট্টগ্রাম চলে আসি। সেখানে আমি বিভাগীয় বড় বড় আন্দোলনগুলোতে আরও সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে থাকি। আমার মনে আছে, আমি আর আমার রুমমেট সাকিব ভাই একসাথে আন্দোলন করতাম। খুনি ও জালিম সরকার আমার সাকিব ভাইকে শুধুমাত্র আন্দোলন করার জন্য মেরে ফেলে। শহীদ সাকিব ভাইকে এখনও মনে পড়ে।

বাসস: ঘটনাটা কি একটু বলবেন?

সাদিক কায়েম: এটা সম্ভবত ২০১৩-১৪ সালের কথা। বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে একে একে হত্যার বৈধতা দেয়া হচ্ছে। এরকমই কোন একটা রায়ের বিরুদ্ধে আমরা চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে মিছিল করছিলাম। নিছক একটা প্রতিবাদ, সেখান থেকে আমার রুমমেট সাকিব ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আমার রুমমেট ছিলেন, আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম তাকে নিয়ে। প্রথমে ওর চোখ উপড়ে ফেলা হয়, তারপর খুন করা হয়। শহীদ সাকিবের কথা মনে পড়লে, আমি শিউরে উঠি।

বাসস: চটগ্রামে উচ্চ মাধ্যমিকের পাট চুকিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন?

সাদিক কায়েম: হ্যাঁ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরই দেখলাম হলে থাকতে হলে (বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন) ছাত্রলীগের মিটিং-মিছিলে যেতে হয়। না গেলে গণরুমে নির্যাতন করে, হল থেকে একপ্রকার বের করে দেয়া হয়। সেসময় আমাকেও জোর করে এক দুইবার নিয়ে গিয়েছিল ওদের সভায়। সেখানে স্লোগান দিতে হতো শেখ মুজিবের নামে। একবার একজন ভুল করে ‘শেখ মুজিব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছিল। তাকে সবার সামনে হেনেস্তা করে পরে অনেক পিটিয়েছিল। এসব দেখে আমার প্রচুর ঘেন্না লাগে, আমি হল থেকে বের হয়ে যাই।

আমি সুদূর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে। আর এই শহরে কোন আত্মীয়র বাসায় থাকার মতো অবস্থাও আমার ছিল না। তাই হল থেকে বের হওয়াটা আমার জন্য ছিল অনেক সমস্যার। কিন্তু দিন দিন এসব দেখে আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল। আমি একটা হলে উঠে পড়াশোনায় মন দেই এবং প্রথম সেমিস্টারে ডিপার্টমেন্টে ফার্স্ট হই।

তারপর আমি আবার হলে সিট পাওয়ার জন্য আবেদন করি। সিট পেয়ে হলে উঠে আবারও ছাত্রলীগের টর্চারে শিকার হই, কেন এতদিন বিভিন্ন প্রোগ্রামে আমি ছিলাম না। আমি তো হলেই ছিলাম না। ছাত্রলীগের এসব নির্যাতন তখন কমন ছিল। কিন্তু আমার মনে একটা আশা ছিল, কয়েকজনও যদি রাজনৈতিক সচেতন ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আছে, এরকম ছাত্র পাই, তাহলে একটা ভালো সার্কেল গড়ে উঠতে পারে।

সেসময় আমার পরিচয় হয় মাহফুজ ভাইয়ের সাথে। বর্তমানে যিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা। মাহফুজ ভাই কালচারালি ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে একটা বোঝাপড়া ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। তার সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমি দেখতে পাই, উনি নিয়মিত পাঠচক্র করেন, রাজনৈতিক সচেতনতা ছড়ানোর কাজ করেন ভেতরে ভেতরে। ছাত্রলীগের নিপীড়ন, অব্যাহত সন্ত্রাস ও গণরুমের নির্যাতনের বিরুদ্ধে যারা ছিল,আমি নিজেই সেসময় থেকেই তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করতাম, নিয়মিত যোগাযোগ রাখতাম। আমাদের ভালো ও শক্তিশালী একটা সার্কেল গড়ে উঠেছিল, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিল।

বাসস: তার মানে জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক আগেই আপনারা আসলে একসাথে একটা ঐক্য তৈরি করে নিয়েছিলেন?

সাদিক কায়েম: অবশ্যই। যেহেতু আমি শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম, তাই আমি ইচ্ছা করেই সামনে আসতাম না। কারণ এতে যদি অন্যরা বিপদে পড়ে। খুনি হাসিনা তো, শিবির সন্দেহেই পিটিয়ে মানুষ মেরে ফেলাকে জায়েজ করে দিয়েছিল। আমি যেহেতু ছোটবেলাতেই আমার রুমমেটকে খুন হওয়ার স্মৃতি নিয়ে বড় হয়েছি, তাই আমি চাচ্ছিলাম আর কেউ যেন এই বিপদে না পড়ে।

কিন্তু সামনে না এলেও সবসময় পেছন থেকে লজিস্টিক সাপোর্ট বা ম্যানপাওয়ার এসব কিছুতে আমি ছিলাম। আমরা আসলে সব আন্দোলনেই আজাদি খুঁজতেছিলাম। একটা শুধু মোমেন্টামের অপেক্ষায় ছিলাম, যার মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটবে।

বাসস: সেই মোমেন্টামটা জুলাই আন্দোলনে পেলেন?

সাদিক কায়েম: তা পেয়েছিলাম বটে, তবে এতটা সহজেও পাইনি। জুলাই আন্দোলনটার যে রূপান্তর, প্রথমে একটা কোটা সংস্কার আন্দোলন, রায় দিয়ে দেয়ার পর বিচারের দাবিতে আন্দোলন, তারপর সেটা স্বৈরাচারের পতনের দাবিতে এক দফায় নিয়ে যাওয়া এটা বেশ বড়সড় একটা ঘটনা। যদিও ঘটনাগুলো মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ঘটেছিল।

বাসস: সংক্ষেপে হলেও শুরু থেকে একটু বলুন, কীভাবে আন্দোলনে আপনি পেছন থেকে নেতৃত্ব দিলেন।

সাদিক কায়েম: জুন মাসে আন্দোলনের ফার্স্ট ফেজ শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলনের মাঝে একটা ঈদ হয়। ঈদের পর অনেকেই ভেবেছিল আন্দোলনটা আর দাঁড়াবে না। কিন্তু আমরা সেকেন্ড ফেজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঈদের পর যখন সেকেন্ড ফেজে আন্দোলন শুরু হলো, তখন একটা জিনিস যোগ হলো, যেটা আন্দোলনের শুরুতে ওতটা ছিল না। সেটা হলো- ছাত্রলীগের হামলা আর নির্যাতন।

এই ফেজটা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। কারণ বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরাই হলে থাকে, হলের শিক্ষার্থীদের নিয়েই মূল আন্দোলনটা চালিয়ে নেয়া হচ্ছিল। যদি হলের ছাত্রছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগ নির্যাতন করে, তাহলে ভয় পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা আর বের হবে না। আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যাবে। এই কঠিন সময়টা যখন পার করছি তখন আমাদের ধারণাও ছিল না, থার্ড ফেজে সরকার কী করতে চলেছে। এতগুলো মানুষকে অবলীলায় খুন করা হবে এইটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।

সাদিক কায়েমের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন জুবায়ের ইবনে কামাল। ছবি: বাসস

বাসস: জুলাই অভ্যুত্থানে সবচেয়ে শক্তিশালী বিষয়টা ছিল ভিন্ন মত ও আদর্শের মানুষের ঐক্য। আপনি একইসাথে এই ঐক্যের সাথে থাকা ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে থেকেছেন। এই বিষয়টাকে ডিল করেছেন কীভাবে?

সাদিক কায়েম: আপনি যেটা বলেছেন, এটা ঠিক। ছাত্রশিবিরের রাজনীতির কারণে বড় একটা গোষ্ঠীকে আমার ডিল করতে হতো। আবার জুলাই আন্দোলনের অনেকেই ছিলেন যাদের সাথে আমার মত ও আদর্শের মিল নেই। আমি আসলে দুইটাকে ডিল করেছি স্ব স্ব উপায়ে। কিন্তু যেকোনো মূল্যে আমার আসলে দুই জায়গায় ঠিক থাকা দরকার ছিল।

শিবিরের সর্বোচ্চ বডিকে বলা হয় কার্যকরী পরিষদ। জুলাই মাসের ৩ তারিখ শিবিরের কার্যকরী পরিষদের মিটিং ছিল। ওখানে আমি আধ ঘণ্টা বক্তব্য রেখেছিলাম, এখনও ডকুমেন্ট খুঁজলে আমার কথাগুলো পাওয়া যাবে। সেখানে আমি বলেছিলাম, এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত মানুষদের আদর্শের সাথে মিল থাকুক না থাকুক, ছাত্র শিবিরের অবশ্যই এই আন্দোলনকে সমর্থন করতে হবে। আমাদের পক্ষে যা যা সম্ভব, যেভাবে সাহায্য করা সম্ভব, আমরা যেন করি। এই আহবানে সেই মিটিংয়ে সবাই সাড়া দিয়েছিল।

অপরদিকে আন্দোলন চলাকালে যখনই প্রতিরোধের দরকার হয়েছে, পেছন থেকে আমি সংগঠনের মাধ্যমে সাপোর্ট দিয়েছি। বিশেষ করে আপনাকে একটা ঘটনা বলি। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করল, সেদিন রাতে হলগুলোতে দুইটা প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছিল। একটা হলো, সবাই আতঙ্কে ছিল। এইরকম অমানবিকভাবে মেয়েদের মারতে পারে। আবার অন্যদিকে আমাদের মধ্যে ক্ষোভ ফেটে পড়ছিল। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের এভাবে মারছে, আমরা কি বইসা থাকব নাকি?

তবে ১৫ জুলাই হামলা করার পরই আমরা দ্রুত আহতদের ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করি। আমাদের সংগঠনের মেডিকেল টিমের যারা ছিল, তারা দ্রুত আহতদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। আর যারা সিভিয়ার ইনজুরড ছিল, তাদেরকে প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে আসা হয়।

সেদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শিবিরের সাথে বসে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেই। সেসময় আসিফ (অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা) আমাকে কল দেয়, আমি জানাই যে, আমরা কালকে যেকোনো মূল্যে চাঁনখারপুল থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। বিশেষ করে সায়েন্সের যে তিনটা হল, আগেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তাদের সাথে নিয়ে কাল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করব।

পরের দিন ছাত্রলীগ রাজু ভাস্কর্যে প্রোগ্রাম ডাকছিল, আমরা জানতাম বহিরাগতদের এনে তারা রাজু ভাস্কর্য দখল করবে। আগের দিন তারা হামলা করছে, পরের দিন রাজু ভাস্কর্যে প্রোগ্রাম করবে এমন সময়ে আমাদের বের হওয়াটা অনেক রিস্কি ছিল। কিন্তু রাতেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গিয়েছিল যে কাল আমরা প্রোগ্রাম করব, আর সেই প্রোগ্রামে যদি আমাদের উপর আক্রমণ হয় আমরা প্রতিরোধ করব। আমি আসিফ (অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা) ও নাহিদকে (জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক) বিষয়টা জানালাম।  অনেক জায়গা থেকেই এই কথা আসতে লাগল যে, পোলাপান আতঙ্কে আছে, নাও আসতে পারে। আমি বললাম, পোলাপান থাকবে ইনশাআল্লাহ, সাথে সাথে প্রতিরোধ সামগ্রীও থাকবে। তুমি আল্লাহর নাম বলে প্রোগ্রাম ডাকো।

পরেরদিন দেখলাম শাহবাগ পুলিশ দখল করে রাখছে, রাজু ভাস্কর্য ছাত্রলীগ আরও সন্ত্রাসীদের নিয়ে দখল করে রাখছে। আমি আমার সংগঠনের ছেলেপেলে দিয়ে প্রতিরোধ সামগ্রী ঢোকালাম। তবে আরেকটা কৌশল কাজে লাগালাম, সায়েন্স ল্যাবের দিকে ছেলেপেলে রেডি ছিল। ওখানে একটা সংঘর্ষ বাধলে ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ ওদিকে মুভ করার চান্স ছিল, আমরা সেই সুযোগে প্রতিরোধ সামগ্রী ঢুকিয়ে দিতাম ক্যাম্পাসে। কারণ শহীদ মিনারে আমাদের পোলাপান নিরস্ত্র, ছাত্রলীগ হামলা করলে ওরা পারতো না। আমাদের কৌশল কাজে লাগলো, সায়েন্স ল্যাবে পুলিশকে ব্যাস্ত রেখে আমরা প্রতিরোধ সামগ্রী ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে ফেললাম।

আমাদের হিসেব ছিল বরাবর, আজ যদি আক্রমণ করতে আসে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অস্তিত্ব রাখব না।

বাসস: এটা বলা হয় যে, দেশে আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হয়েছিল।

সাদিক কায়েম: একদমই তাই। সে দিনই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল, আমাদের দৃষ্টি আরও অনেক দূরে। এসব ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাস থেকে সমূলে উঠিয়ে ফেলতে হবে। মেয়েরা এক রাতেই অনেকগুলো হল থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছিল এবং হল প্রোভোস্ট থেকে লিখিতভাবে হলকে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা দিয়েছিল। এটা ছিল প্রতিরোধের শুরু মাত্র।

আপনাকে আরেকটা জিনিস জানিয়ে রাখি, আমাদের একটা স্ট্রং ডকুমেন্টেশন টিম ছিল। আমাদের উপর কারা আক্রমণ করেছে, ভিডিও-ছবি দেখে দেখে তাদের চিহ্নিত করে পরিচয় বের করতাম। নাম, বাবার নাম, ডিপার্টমেন্ট, গ্রামের বাড়ি। আমরা দ্রুত ছবিসহ পোস্টার ছাপিয়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে লাগাতাম। যেন মানুষকে দেখাতে পারি, এই দেখেন কুলাঙ্গার, চিনে রাখেন।

আমার কথা ছিল সিম্পল, যে আমাদের চোখের সামনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের মারছে। ওদের জীবন আমরা দুর্বিসহ করে দেব।

বাসস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পরও তো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমেছিল। এটাকে কীভাবে দেখেন?

সাদিক কায়েম: এটা আসলে অভূতপূর্ব। যদিও আমরা আগে থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে আন্দোলনের এওয়ারনেসটা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ১৮ জুলাই যে প্রাইভেটের সাধারণ স্টুডেন্টরা এভাবে রাস্তায় নেমে আসবে, এটা আসলে অভূতপূর্ব ঘটনা ছিল।

বাসস: আমরা শুনেছি, ইন্টারনেট বন্ধ থাকা অবস্থায় বিদেশি মিডিয়ায় আন্দোলনের খবর প্রচার করার ব্যাপারে পেছনে আপনি কাজ করেছিলেন। এরকম এক দু’টো ঘটনা বলবেন কী?

সাদিক কায়েম: আমরা আসলে আগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম, ইন্টারনেট বন্ধ করে দিতে পারে। তাই আগে থেকেই বেশ কিছু সিম কিনেছিলাম, এমনকি আলাদা বাটন ফোনও রেডি ছিল। যেমন, ৯ দফা লেখার পর সেটাকে মিডিয়াতে দেয়ার জন্য আমি প্রিন্ট করে দেশি ও বিদেশি মিডিয়া অফিসগুলোতে পৌঁছে দিচ্ছিলাম। আসলে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার দিন থেকেই আমি সাংবাদিকদের কাছে কীভাবে হ্যান্ড টু হ্যান্ড আমাদের কর্মসূচি পৌঁছানো যায় তার কাজ করে যাচ্ছিলাম।

আরও অনেক ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছিল। ২৬শে জুলাই ছয় সমন্বয়ককে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আব্দুল হান্নান মাসুদ (সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক, এনসিপি), রিফাত রশীদ (সভাপতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) সহ আরও কয়েকজন কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে একটা প্রেস কনফারেন্স করার কথা ছিল। ওরা আমাকে ফোন করে জানায় যে, ওদের গণহত্যা বিষয়ক ডকুমেন্ট লাগবে। আমাদের ডকুমেন্ট টিম ততদিনে শহীদের একটা তালিকা করে ফেলেছিল। আমি সেই তালিকাসহ গণহত্যার প্রায় ১০০ ছবি প্রিন্ট করি। তারপর সেগুলো মোসাদ্দেক আর জিসানকে (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী) দিয়ে পাঠাই।

আমি ১৯ জুলাই থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা অবস্থায় প্রায় প্রতিদিনই আমার নিজের নাম্বার থেকে কর্মসূচীগুলো দেশের সাংবাদিকদের কাছে পাঠাতাম। যেগুলো বিস্তারিত জানানোর দরকার ছিল, সেগুলো প্রিন্ট করে পৌঁছে দিতাম।

তখন অনেক বিদেশি মিডিয়াই আমাদের কর্মসূচির আংশিক আবার কিছু ক্ষেত্রে পুরোটাই প্রকাশ করছিল। বিদেশি মিডিয়ায় খবরগুলো পৌঁছেতে গিয়ে সেখান থেকে বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং কানেকশন তৈরি হয়, যার মাধ্যমে আমার ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে।

বাসস: সেগুলো যদি একটু বলেন।

সাদিক কায়েম: যেমন তখন আওয়ামী লীগ হন্যে হয়ে সমন্বয়কদের খুঁজছিল। প্রথম সারির সমন্বয়ক যারা অর্থাৎ নাহিদ-আসিফ ওদের তো একবার ধরে নিয়ে টর্চার করে ছেড়ে দেয়। নাহিদকে তো হসপিটাল থেকে আবার তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও ছয় সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রেখে জোর করে আন্দোলন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। দ্বিতীয় সারির যারা সমন্বয়ক তারাও তখন অনেক বিপদে পরে গিয়েছিল, গোয়েন্দা বাহিনী তাদেরও খুঁজছিল। যেমন আব্দুল কাদেরের কথাই বলতে পারি, যার নামে ৯ দফা গেছে, সে প্রচুর আতঙ্কে ছিল। তার একটা সেইফ হোম দরকার ছিল।

আমি যখন আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করি, তখন সে একটা মসজিদে আশ্রয় নিয়েছে। মসজিদটা নারায়ণগঞ্জে। আমি তার লোকেশনটা ভালোভাবে বুঝে নিয়ে তৎক্ষণাৎ একটা ব্যবস্থা করি, নিরাপদ আশ্রয়ে আব্দুল কাদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসি।

কিন্ত একজন সমন্বয়ককে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার আগেই সে প্রচুর ভয় পাচ্ছিল।

বাসস: তারপর কী করলেন?

সাদিক কায়েম: আমাকে একজন মানবাধিকার কর্মীর ফোন নাম্বার দিলেন একজন। আমি ওখানে যোগাযোগ করার পর আমাকে একজন বাংলাদেশী নারী সাংবাদিকের ফোন নাম্বার দেয়া হলো, সঙ্গত কারণেই তার নাম বলছি না। আমি ফোন দেয়ার পর উনি আমার সাথে আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সাঈরের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন।

আমি এর আগে জুলকারনাইন সায়েরকে চিনতাম না। আল জাজিরার একটা ডকুমেন্টারিতে তাকে এক ঝলক দেখেছিলাম এটুকুই। উনি আমাকে বেশ কিছু নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন। সেখানে আমি অনেক সমন্বয়ককে রাখলাম।

বাসস: আমরা শুনেছি আপনি সবার আগে প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরকার প্রধান হবার অনুরোধ করেছিলেন। এই ঘটনাটা কি বলবেন?

সাদিক কায়েম: সত্যি বলতে হাসিনা যতই বোঝানোর ট্রাই করুক, পরিস্থিতি শান্ত কিন্তু জুলাই মাসের শেষের বোঝা যাচ্ছিল হাসিনার আর বেশিদিন নেই। আগস্টের এক তারিখেই আমরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম এই সরকার আর থাকছে না। আজকে হোক কালকে হোক সরকারের পতন ঘটবেই। তখনও এক দফা ঘোষণা হয়নি কিন্তু আমি ইতিমধ্যেই পরবর্তী সরকারের ফরমেশন কেমন হবে, কারা সরকারে থাকবে এসব নিয়ে ভাবা শুরু করে দিয়েছিলাম।

নাহিদ, আসিফকে সঙ্গে নিয়ে আমি সরকারের ফরমেশনের আলাপ করতে থাকি। বিশেষ করে মাহফুজ ভাইয়ের সাথে আমার লম্বা আলাপ হচ্ছিল। সেসময় আমরা জাতীয় সরকারের একটা প্রস্তাবের কথা ভেবেছিলাম। তখন আমরা গণভবন মুখে অভিযাত্রার পরিকল্পনা ফাইনাল করে ফেললাম। ঢাকার দশটি ভিন্ন পয়েন্ট থেকে কীভাবে গণভবনের দিকে জনতা ঢুকবে, সেটা নিয়ে আলাপ হয়।

৩ আগস্ট সকালে আমি প্রথমবারের মতো প্রফেসর ইউনূসের সাথে যোগাযোগ করি। আমি তার বিশেষ সহকারীর সাথে যোগাযোগ করে প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে কানেক্ট হই। তাকে আমি একটা ইমেইল করি, পুরো জুলাই মাসে কী কী ঘটেছে, কী পরিমাণ খুন হয়েছে, হিউম্যান রাইটস লঙ্ঘন হয়েছে, এখন হাসিনার পতন ঘটা সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সরকার গঠন হলে সেটার প্রধান হিসেবে তাকে ছাড়া কাউকে বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না তাও জানালাম।

উনি মেইলের উত্তরে বেশ সুন্দর কিছু কথা লেখে। আমাদের অভিনন্দন জানায়, আমরা বিশ্বের বুকে নজির স্থাপন করেছি সেটিও জানায়। আমাদেরকে অ্যাপ্রিশিয়েট করার পর আমি ৪ আগস্ট উনার সাথে একটা মিটিং ফিক্সড করি, যেখানে আমি ছাড়াও আসিফ মাহমুদ (অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা) থাকবে। তবে এর আগেই ৩ আগস্ট বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক দফা ঘোষণার জন্য ডাক দেয়া হয়। সেদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখ লাখ মানুষ শহীদ মিনারে আসে, জুলাই আবার ফিরে আসে। সেদিন সাধারণ মানুষও বুঝে যায়, এই সরকার যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বাসস: আপনি যেভাবে আন্দোলনের পেছন থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আপনার সরকারে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কি?

সাদিক কায়েম: আমি সেগুলো নিয়ে আগে ভাবিনি, এখনও ভাবি না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটানো, আমি সেটার সঙ্গে ছিলাম এটুকুই আমার জন্য যথেষ্ট। ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের অফিসে একটা প্রেস কনফারেন্সে আমি প্রথম মিডিয়ার সামনে আসি। সেদিন রাতে নাহিদ-আসিফ একটা ভিডিও আপলোড করে, সেটাও আমার বাসা থেকেই। আমি শুধু চেয়েছিলাম, আমরা সফল হতে, আলহামদুলিল্লাহ হয়েছি। আমি সরকারে গেলাম বা না গেলাম এতে কিছু যায় আসে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঝিনাইদহে বিজিবি’র প্রচেষ্টায় দেশে ফিরেছে গুলিবিদ্ধ যুবকের মরদেহ
চট্টগ্রামে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মা ও ছেলে গ্রেপ্তার
পবিত্র আশুরা জুলুম ও অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা
আওয়ামী নেতাদের দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য : তারেক রহমান
হালাল পণ্যের বাজার ও  উৎপাদনে অনুসরণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সাবেক সিইসি শামসুল হুদার মৃত্যুতে ইসির শোক 
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ডিএমপিতে ৩,৬২২ মামলা
জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণে বান্দরবানের মর্যাদা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে : ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা
শ্রম আইন মোতাবেক সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে : নজরুল ইসলাম খান
আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিতে প্রতিবার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ভাবতাম আর ফিরতে পারব না : সিনথিয়া
১০