টানা চার দিনের অব্যাহত শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড় 

বাসস
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:২৬ আপডেট: : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:১৬
পঞ্চগড়ে অব্যাহত শীতেও ক্ষেতে কাজে ছুটছেন কৃষক। ছবি: বাসস

পঞ্চগড়, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস): দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে টানা চার দিনের অব্যাহত শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত থেকে সকাল অবধি ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পুরো জেলা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকেলের পর থেকে শীত বাড়তে থাকে। 

এদিকে অব্যাহত শীতে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। স্থানীয় হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ও সূর্যের দেখা মেলেনি। গতকাল বুধবার একই সময় রেকর্ড করা হয়েছিলো ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন, আকাশের উপরিভাগে মেঘ এবং ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে আসছে না। ফলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভুত হচ্ছে। 

এদিকে, ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে রয়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। হাঁড় কাঁপানো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নির্বারণের চেষ্ট করছেন তারা। অনেকেই ছুটছেন ফুটপাতে গরম কাপড়ের খোঁজে। যানবাহনগুলোকে সকালের দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলাচল করতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার হাড়িভাসা এলাকার দিনমুজুর ওমর আলী বলেন, শীতের কারণে সকালে কাজে যেতে কষ্ট হয়। একটু দেরিতে গেলে গৃহস্থ কাজে নিতে চায় না। এ জন্য প্রতিদিন কাজেও যাওয়া হয় না।

জেলা শহরের রিকশা চালক আবু বক্কর বলেন, শীতের কারণে সকালে বের হওয়া যায় না, আবার সন্ধ্যা হলেই ঘরে ঢুকতে হয়। এছাড়া সকালে এবং সন্ধ্যার পরে শহরে লোকজনও কম থাকে। সব মিলিয়ে রোজগার কম হচ্ছে।

ট্রাক চালক আবু রায়হান বলেন, শীতের সময় গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। কোনো কোনো দিন কুয়াশা বেশি হয়। এর ফলে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে। অনেক সময় কুয়াশার কারণে সকাল বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে প্রতিদিনই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। একই চিত্র জেলার অন্য হাসপাতালগুলোতেও।

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার জেমজুট এলাকার গৃহবধূ শিল্পী আক্তার ৪ বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে। সন্তানের ডায়েরিয়ার কারণে চিকিৎসক তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেছেন। 

শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে ৬ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন সদর উপজেলার শিংপাড়া এলাকার মায়া আক্তার। তিনি বলেন, অতিরিক্ত শীতের কারণে সন্তানের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।

জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাই গত দুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ফলে অন্য সময়ের তুলনায় এখন হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। 

তিনি বলেন, হাসপাতালে যথাসাধ্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের বাঁশি খাবার পরিহার করা, খাবার ঢেকে রাখা এবং রাতে শিশুকে নিয়ে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হলো ডিএনসিসি
চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ঘনচিনি আটক
এলডিসি উত্তরণের জন্য স্থিতিশীল নীতি সহায়তা চায় তৈরি পোশাক খাত
খুলনার চিংড়ি চাষীদের উন্নত গলদা চাষের কৌশল শিখতে ‘অভিজ্ঞতা বিনিময়’ সফর 
কারমাইকেল কলেজের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উৎসবের আমেজ
বিএমইউ এবং এনএসইউর মধ্যে এআই প্রযুক্তি সহায়তা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর 
সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে ৭ দফা নির্দেশনা জারি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের
রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রচারে উত্তরায় বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি
যারা হেরে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন, তারাই নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছেন : মির্জা ফখরুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮তম টিএইচএম ডে ও ক্যারিয়ার ফেস্ট 
১০