সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে ৭ দফা নির্দেশনা জারি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের

বাসস
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২১:০৬

ঢাকা, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্রয়, দান, হেবা, নামজারি, হস্তান্তর, আম-মোক্তার বা ঋণ অনুমতির ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন গ্রহণের প্রথা বাতিল করে ৭ দফা নির্দেশনা জারি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

আজ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সকল নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নকৃত আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর পরবর্তী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেবা সহজ, লিজ গ্রহীতাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি লাঘব এবং দুর্নীতি দূর করার লক্ষ্যে বিদ্যমান প্রথা ও পদ্ধতি নিম্নরূপে পরিবর্তন করা হলো :

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নকৃত ও বরাদ্দকৃত আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট এর ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান বা হেবা সূত্রে নামজারি, হস্তান্তর (বিক্রয়, দান, হেবা বা বণ্টন) দলিল সম্পাদন বা বাতিল, আম-মোক্তার দলিল সম্পাদন বা বাতিল এবং ঋণ গ্রহণের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন গ্রহণের বিদ্যমান প্রথা বাতিল করা হলো।

এ প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে উপর্যুক্ত কার্যক্রমের জন্য তফশিলে বর্ণিত আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। তবে লিজ দলিলের অন্যান্য শর্ত যেমন, কোনো প্লটের বিভাজন বা একাধিক প্লটের একত্রীকরণের মাধ্যমে প্লটের আয়তনের পরিবর্তন এবং প্লট বা ফ্ল্যাটের ব্যবহার শ্রেণির পরিবর্তন অর্থাৎ মাস্টার প্ল্যানের কোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণের বর্তমান পদ্ধতি বহাল থাকবে।

দলিল গ্রহীতাকে উন্নয়নকৃত ফ্ল্যাট বা ভবনসহ ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের দুই শতাংশ হারে এবং শুধু প্লট বা ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের তিন শতাংশ হারে অর্থ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন দলিল সম্পাদনকালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুকূলে জমা প্রদান করতে হবে।

এছাড়া, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক উন্নয়নকৃত প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একই হারে ও পদ্ধতিতে মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে (প্রাতিষ্ঠানিক কোড নম্বর: ১৩২০১০১১১৮৮২৭, অর্থনৈতিক কোড নম্বর: ১৪২২৩১২) নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) হিসেবে আদায় করা হবে।

লিজকৃত সম্পত্তির মালিকানা সম্পর্কিত বিরোধ পরিহার এবং মালিকানা রেকর্ড লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও হালনাগাদ রাখার লক্ষ্যে প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল সম্পাদনের পর অবিকল নকলের একটি কপি (সার্টিফাইড কপি) এবং নামজারির পর এ সম্পর্কিত রেকর্ডপত্র ক্রেতা বা ক্ষেত্রমত, দলিল গ্রহীতা কর্তৃক দলিল সম্পাদনের নব্বই দিনের মধ্যে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে দাখিল করতে হবে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করতে ব্যর্থ হলে দৈনিক পঞ্চাশ টাকা হারে সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা যাবে। হস্তান্তর দলিল বা নামজারি সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে দাখিলের ত্রিশ দিনের মধ্যে মালিকানা রেকর্ড হালনাগাদ করতে হবে।

হালনাগাদকৃত রেকর্ডপত্র রেজিস্ট্রার্ড ডাকের পাশাপাশি ই-মেইল বা ইলেক্ট্রনিক অন্য কোনো মাধ্যমে ক্রেতা বা ক্ষেত্রমত দলিল গ্রহীতাকে অবহিত ও প্রেরণ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তা পরিপালনে ব্যর্থ হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কর্তব্য-কর্মে অবহেলার দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

লিজ দলিলের মেয়াদ শেষে (নিরানব্বই বছর পর) তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নকৃত বলে গণ্য হবে এবং অনুচ্ছেদ (২) এ বর্ণিত হস্তান্তর ফি আদায়ও রহিত হয়ে যাবে। তবে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের পূর্বানুমতি ব্যতীত প্লটের বিভাজন বা একাধিক প্লটের একত্রীকরণ, প্লট বা ফ্ল্যাটের ব্যবহার শ্রেণির পরিবর্তনসহ মাস্টার প্ল্যানের কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।

আবাসিক ব্যতীত অন্যান্য (প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্য ও শিল্প) প্লট, ফ্ল্যাট বা স্পেসের হস্তান্তর ও নামজারিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে লিজদাতা কর্তৃপক্ষ হতে অনুমোদন গ্রহণের বিদ্যমান প্রথা বহাল থাকবে।

যে সকল আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে এবং উক্ত বিরোধে সরকারের স্বার্থের সংশ্লেষ রয়েছে, যে সকল প্লট, ফ্ল্যাট বা বাড়ি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে অথচ ১৯৮৮ সালের ২৮ মার্চের পরে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্ত করা হয়নি এবং যে সকল আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মেয়াদে বিশেষ বিবেচনায় বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত, সে সকল প্লট, ফ্ল্যাট বা বাড়ির ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠান হতে অনুমোদন গ্রহণের বিদ্যমান প্রথা বহাল থাকবে।

এ অনুচ্ছেদের অধীন লিজদাতা প্রতিষ্ঠান হতে অনুমোদন পাওয়ার পর অনুচ্ছেদ (২) এ বর্ণিত পদ্ধতি ও হারে ক্রেতা বা ক্ষেত্রমত, দলিল গ্রহীতাকে প্রযোজ্য ফি পরিশোধ করতে হবে।

যে সকল আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান বা হেবা সূত্রে নামজারি, হস্তান্তর (বিক্রয়, দান, হেবা বা বণ্টন) দলিল সম্পাদন বা বাতিল, আম-মোক্তার দলিল সম্পাদন বা বাতিল এবং ঋণ গ্রহণের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে লিজ দাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন হবে না, সে সকল আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের তালিকা এ প্রজ্ঞাপনের অধীন, যথা শিগগিরই সম্ভব, তফশিল আকারে প্রকাশ করা হবে।

তবে প্রকাশিত তফশিলে পরবর্তীতে কোনো ভুল-ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধনের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
টিকিট ছাড়া সিলেট টেস্ট দেখার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হলো ডিএনসিসি
চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ঘনচিনি আটক
এলডিসি উত্তরণের জন্য স্থিতিশীল নীতি সহায়তা চায় তৈরি পোশাক খাত
খুলনার চিংড়ি চাষীদের উন্নত গলদা চাষের কৌশল শিখতে ‘অভিজ্ঞতা বিনিময়’ সফর 
কারমাইকেল কলেজের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উৎসবের আমেজ
বিএমইউ এবং এনএসইউর মধ্যে এআই প্রযুক্তি সহায়তা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর 
সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে ৭ দফা নির্দেশনা জারি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের
রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রচারে উত্তরায় বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি
যারা হেরে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন, তারাই নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছেন : মির্জা ফখরুল
১০