রংপুরে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, কৃষিখাতে প্রভাব

বাসস
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩২
শুক্রবার বেলা ১২ টার পরও রংপুরে দেখা মেলেনি সূর্যের। ছবি: বাসস

রংপুর, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জেলায় আকাশে আজও দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। হিমশীতল আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে শ্রমজীবী মানুষ। প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতে।

আজ শুক্রবার বেলা ১২ টার পরও দেখা মেলেনি সূর্যের। জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, এই পরিস্থিতি আরো দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে।

হিমশীতল আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে খেটে খাওয়া মানুষ। দুপুর ১টার দিকে শহরের সাত মাথা এলাকায় রিকশাচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, শীতে একেবারে কাহিল হয়ে গেছি। পেটের তাগিদে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়েছি। তবে রোজগার আগের তুলনায় একেবারে কমে গেছে।

চলমান শীতে প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতে। জেলার পীরগাছা উপজেলার আলু চাষিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। এ সময়ে ফসলের পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরা শঙ্কিত লেট ব্লাইট রোগ নিয়ে।

পারুল ইউনিয়নের দেউতি এলাকার বাসিন্দা কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আবহাওয়া যদি এমন থাকে, আলুর ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দিনভর গাছ কুয়াশায় ভিজে থাকছে। এ অবস্থায় ঔষধ স্প্রে করার কোনো উপায় নেই।

এদিকে, শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধ ও শিশু রোগীদের মধ্যে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এতে চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এছাড়া হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দিন দিন বাড়ছে অগ্নিদগ্ধ রোগীর সংখ্যা। চলমান শীতে এখন পর্যন্ত আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চারজন প্রাণ হারিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আর বর্তমানে বার্ন ইউনিটে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। যার অধিকাংশ রোগী শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়েই দগ্ধ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

এদিকে শহরের ছিন্নমূল মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। চরাঞ্চল ও বস্তিগুলোতে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না পৌঁছানোর অভিযোগ রয়েছে।শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় শীতার্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে শীতে ভ্রাম্যমাণ শ্রমজীবীরা কর্ম হারিয়েছে। শীত বস্ত্র না পেয়ে অনেকটা দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বাসস কে বলেন, প্রতিটি উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও নানা সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিত্তবানদেরও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মুস্তাফিজার রহমান বাসস কে জানান, আগামী দুই-তিন দিন এমন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের উষ্ণ পরিবেশে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আইপিএলে খেলতে মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দিয়েছে বিসিবি
কেলির সেঞ্চুরিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দল
সাম্য হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
তরুণ বিজ্ঞানীদের গবেষণায় পার্বত্য চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হতে পারে : উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
আবুধাবিতে শেষ হলো ট্রাম্পের গালফ সফর
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি
এভারেস্ট জয়ের ৫০ বছর: হাজারতম নারী আরোহণের দ্বারপ্রান্তে
শেরপুরে লোকালয় থেকে উদ্ধারকৃত সজারু বনে অবমুক্ত
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গোফরানের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক
রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় হাট বসানো যাবে না
১০