ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় দুইমাস মাছ ধরা বন্ধ

বাসস
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৬
ভোলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় এবারও মার্চ-এপ্রিল এ ২ মাস সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা। ছবি : বাসস

॥ আল-আমিন শাহরিয়ার ॥

ভোলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ভোলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মার্চ-এপ্রিল এ ২ মাস ভোলা'সহ উপকূলের নদ নদীর ইলিশের অভয়াশ্রমে সবধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার  মধ্যরাত থেকে ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত নিষিদ্ধ এলাকায় সব ধরনের জাল ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে অভয়াশ্রমগুলোতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অমাণ্যকারীদের ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভোলা মৎস্য বিভাগ।

জাটকা সংরক্ষণে ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা অংশ থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভোলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

নিষেধাজ্ঞার এ দুই মাস মাছ শিকার বন্ধে জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। গঠন করা হয়েছে মনিটরিং টাস্কফোর্স। করা হয়েছে মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ প্রত্যেক উপজেলার নদীর পাড়ে অভয়াশ্রম এলাকায় মতবিনিময় সভা।

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, এবার ভিজিএফ প্রাপ্ত জেলের সংখ্যা ৮৯ হাজার ৬ শত এবং দুই মাসে ৮০ কেজি করে মোট ৭ হাজার ১শ' ৬৮ মেট্রিক টন চাল 

নিষেধাজ্ঞা চলমান সময়ে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত চাল পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় থাকেন সাধারণ জেলেরা। বেকারত্বের এ ২ মাসে পরিবার নিয়ে কীভাবে দিন কাটবে তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ সবার কপালে।

ভোলার ইলিশা মাছ ঘাটের জেলে মো. জসিউদ্দিন ও তুলাতলির জেলে জয়নাল, কাঞ্চন মাঝি, ফরিদ, সালাউদ্দিন ও ফখরুল মাল চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব লিখে কী হবে। অপরদিকে দৌলতখান মাছ ঘাটের জেলে মো.বশির, নজরুল, মিজান মাঝি ও বিপ্লব পালসহ বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। ক্ষোভ নিয়ে তারা বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও যেন অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে না হয় সেই আকুতি এসমস্ত জেলে পরিবারগুলোর।

এ বিষয় ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন কবির বলেন, অতীতে প্রত্যেক ওয়ার্ডের জেলেদের তালিকা যাচাই করে জেলে নয় এমন লোককে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে প্রকৃত জেলেদের তালিকা প্রণয়ন করে চাল দেয়া হতো। ওই এলাকার লোকজন বলেন, জেলেদের প্রকৃত তালিকা থাকলেই জেলে পুনর্বাসন প্রকল্প সফল করা সম্ভব। 

এদিকে গত রোববার মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলি ইউনিয়নের চালচরে জেলে নিবন্ধন হালনাগাদ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রকৃত জেলেদের তথ্য নিয়ে স্বচ্ছভাবে জেলে নিবন্ধন করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক প্রভাব কাজে আসবে না। এছাড়াও আমরা এখন বর্তমানে চেষ্টা করছি নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত ২৫ কেজি চালের পরিবর্তে ৪০ কেজি করা ও ৪০ কেজির পরিবর্তে ৫০ কেজি করা  এবং চালের সাথে ডাল ও তেল দেয়ার দাবি জেলেদের ন্যার্য দাবি। আমরা সেই দাবি পূরণের চেষ্টা করবো।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বাসস'কে বলেন, চাল বিতরণ নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলেরা যেন সঠিকভাবে চাল পায় সে জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলেদের তালিকায় স্বচ্ছতা আনার কাজও করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে অভয়াশ্রমগুলোতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা দণ্ডনীয় অপরাধ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কাতারে বাংলাদেশি মহিলা খেলোয়াড়রা ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন
টঙ্গীতে একাধিক হত্যা মামলার আসামি অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া গ্রেফতার 
কাতার বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ সমঝোতা স্মারক নবায়ন করবে
দেশের সব সেক্টরকে ধ্বংস করে গেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ : এ্যানি
ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা সংকট উপেক্ষা করা উচিত হবে না বিশ্বের : প্রধান উপদেষ্টা
হাকিম-মিলন চত্বরে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
সারা দেশে পুলিশের অভিযানে ১ হাজার ৬ শ’ ১০ জন গ্রেফতার
কুমিল্লায় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে আলোচনা সভা ও হুইল চেয়ার বিতরণ
সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার না করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 
গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
১০