কামরুল হাসানের শখের বশে আঁকা ছবি এখন যাচ্ছে বিদেশে

বাসস
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১৮:৩১
কামরুল হাসান ছবি আঁকছেন। ছবি: বাসস

নেত্রকোনা, ১৩ মার্চ ২০২৫ (বাসস): কামরুল হাসান, পেশায় নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। কর্মসূত্রে দেশের বিভিন্ন জেলায় বদলি হওয়ার কারণে পরিবার থেকে দূরে থাকতেন, কলেজ ডরমিটরিতে একাকি সময় পার করার সময় শখের বশে শুরু করেন আঁকাআকি। আর এখন তাঁর ছবি  দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে  বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।

ছোটবেলা থেকে আঁকাআঁকির প্রতি টান ছিল প্রচুর। খাতার কোণায়, বইয়ের পাতায় বলপেনে যা মন চেয়েছিল তাই আঁকতেন । ইচ্ছা ছিল চারুকলাতে পড়াশোনা করার। কিন্তু পেশা হিসেবে চিত্রশিল্পকে নিতে চাননি বলে আর পড়া হয়ে উঠেনি। কিন্তু আঁকার প্রতি ভালবাসাটা রয়েই গেল। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। প্রায় সময়ই চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে বসে থাকতেন। শিল্পীদের আঁকা ছবি দেখতেন। রঙ ক্যানভাসসহ বিভিন্ন উপকরণের দামের কথা চিন্তা করে কখনো এসবে আঁকা হয়নি। তারপর অনেকদিন পেরিয়ে গেলো। বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে যোগাদান করলেন এ ইচ্ছায় যে, অধ্যাপনার পাশাপাশি চিত্রশিল্পের চর্চাটাও চালিয়ে যেতে পারবেন।

তারপর ২০১৬ সাল থেকে জল রঙ কাগজ কিনে আঁকা শুরু । তিনি তখন রংপুর সরকারি কলেজে পরিবার পরিজন ছেড়ে একা থাকেন কলেজ ডরমিটরিতে।  চর্চা করার প্রচুর সময় পেতেন।  প্রতিদিনই ছবি আঁকতেন আর ফেসবুকে আপলোড দিতেন। মানুষের প্রচুর উৎসাহ পেয়ে  এভাবেই আঁকাআঁকি করার আরো অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। পরবর্তী তে প্রিয় মাধ্যম হয়ে গেলো ক্যানভাসে এক্রিলিক রঙে আঁকা। এখন এ মাধ্যমে কাজ করে মানুষের প্রচুর সাড়া পাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৮০০  ছবি এঁকেছেন। দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার প্রভৃতি দেশে প্রায় ২০ টির মতো ছবি বিক্রি হয়েছে। দেশেও প্রায় ১০০ মতো ছবি বিক্রি হয়েছে। বই এর প্রচ্ছদ করেছেন ১৪ টি। মানুষের ভালবাসা আর উৎসাহে এঁকে যাচ্ছেন তিনি।

আজীবন চর্চাটা করে যেতে চান। একটি সুন্দর আগামী প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য নিজে আঁকার পাশাপাশি বাচ্চাদেরও শেখাচ্ছেন। এ কার্যক্রমটা চালিয়ে যেতে চান। ছোট্ট পরিসরে একক প্রদর্শনী করেছেন, তবে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে একক চিত্র প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে। চিত্র কলায় এডুকেশন ওয়াচ(এটিএন বাংলা) এর "আপন আলোয় উদ্ভাসিত সম্মাননা-২০২৪' পেয়েছেন।

জল রঙ দিয়ে আঁকার যাত্রা শুরু হলেও এখন তাঁর প্রিয় মাধ্যম ক্যানভাসে এক্রিলিক রঙ। এ মাধ্যমেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। ভাল লাগে বাংলার প্রকৃতি, তাই উঠে আসে তাঁর ক্যানভাসে। দেশের বাইরে যে ছবিগুলো বিক্রি হয়েছে তা সবই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব  করে এমন ছবি। প্রবাসীরা এমন ছবি বেশি পছন্দ করেন।

তিনি বাসসকে বলেন, "আঁকা আমাকে আনন্দ দেয়, এ আনন্দ শিল্প সৃষ্টিতে উৎসাহ প্রদান করে। আমি মনে করি একটি রাষ্ট্র  ও তার সমাজ ব্যবস্থাকে সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োজিত করতে পারলে তার স্থিতিশীল রাষ্ট্র বিনির্মাণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তাই আগামী প্রজন্মকে শিল্পচর্চায় উৎসাহ প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা মুখ্য।"

গুণী এ শিল্পী জেলা শহরের ঠিক মগড়া নদীর পাড়ে  চারুভিটা নামে নিজের বাড়িতে থাকেন এবং  অদূর ভবিষ্যতে  একটি আর্ট ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
হাওড় অঞ্চলের প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করার তাগিদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার
রুচি ৩৬তম জাতীয় নারী হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
আসিয়ানে যোগদানের প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্ভাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ
সিলেটে জেলা প্রশাসক আন্তঃউপজেলা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু
সাবেক হুইপ মাহমুদ পরিবারের সম্পদ জব্দ
করতোয়া দখলমুক্ত করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু 
আমদানি অনুমতির খবরে চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম 
সাবেক এমপি আশরাফের স্ত্রী আফরোজার জমি-দোকান ক্রোকের আদেশ
শেরপুরে নিখোঁজের একদিন পর ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
১০