বাকৃবি (ময়মনসিংহ), ২৩ জুন, ২০২৫ (বাসস): নানা কারণে শিক্ষার্থীরা আজকাল মানসিক চাপে ভুগছেন। এ চাপ থেকে বিষণ্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, শারীরিক অসুস্থতা এমনকি আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর সিদ্ধান্তের দিকেও অনেক সময় শিক্ষার্থীরা ধাবিত হন। এই সংকট সমাধানে এবার শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিশেষ সহায়তা দিতে চালু হতে যাচ্ছে ‘স্কুল অব এসেনশিয়াল স্কিলস’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম।

আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহমূদুল হাসান শিকদার বাসসকে জানান, বিভিন্ন সময়ে বহু শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসত। আমি তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতাম এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতাম। কিন্তু দেখলাম, সমস্যা অনেক বড়। শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য একটি জায়গা খুঁজছে, যেখানে তারা গোপনে নিজেদের কথা শেয়ার করতে পারবে। সেই ভাবনা থেকেই ‘স্কুল অব এসেনশিয়াল স্কিলস’-এর উদ্যোগ।

এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিচয় গোপন রেখে তাদের মানসিক সমস্যা ও ব্যক্তিগত সংকট লিখে পাঠাতে পারবে। শিক্ষার্থীদের পাঠানো এসব সমস্যার সমাধানে যুক্ত থাকবেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং ক্যারিয়ার মেন্টররা।

অধ্যাপক শিকদার আরও জানান, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করাই এই প্ল্যাটফর্মের মূল উদ্দেশ্য। প্রতি সপ্তাহে একদিন ফেসবুক বা ইউটিউব লাইভের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের কেউ হয়তো নিজের সমস্যা লিখে পাঠাবে, সেটি আবার অন্য শিক্ষার্থীরও উপকারে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা একটি সফটওয়্যার তৈরির কাজ শুরু করেছি, যেখানে শিক্ষার্থীরা সহজে এবং গোপনীয়ভাবে তাদের প্রশ্ন ও সমস্যা জানাতে পারবে। প্ল্যাটফর্মটি শুধু মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা, ভবিষ্যৎ করণীয়, পেশা বাছাইসহ বিভিন্ন দিকেও দিকনির্দেশনা দেবে।

এর আগে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করা হলেও বিষয়টি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না বলে জানান, অধ্যাপক শিকদার। তার আশা, আগামী মাস থেকে ‘স্কুল অব এসেনশিয়াল স্কিলস’-এর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতনমহল বলছেন, এই ধরনের সময়োপযোগী উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে, হতাশা দূর করতে এবং সুস্থ-সচেতন প্রজন্ম গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।