খাগড়াছড়ি , ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস): পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় নিরাপদ কৃষি চর্চা ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে এগ্রোইকোলজি বিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মধ্যবেতছড়িতে হিল গার্ডেন অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মে প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন অরণ্য বাংলাদেশ এ কর্মশালার আয়োজন করে ।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। হিল গার্ডেন অ্যাগ্রো ফার্মের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক। কর্মশালায় স্থানীয় ৩০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেন।
ড. মো. নাজিম উদ্দিন ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে উপস্থিত কৃষকদের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামে ফল ও ফসল উৎপাদনে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার বেড়েছে। এছাড়া আমদানিকৃত বীজের উপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাওয়ায় জুমসহ দেশীয় প্রজাতির বীজ হারিয়ে যাচ্ছে।
তিনি নিরাপদ কৃষিপণ্য উৎপাদনে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিবর্তে জৈব সার ও কাঁচা নীম পাতা, গুলচো, আমপাতা এবং কাঁচা হলুদ সেদ্ধ করে তৈরি করা পরিবেশ বান্ধব বিশেষ বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এছাড়াও তিনি পাহাড়ে জুমচাষসহ সমতলেও ফসল উৎপাদনে দেশি প্রজাতির বীজ ব্যবহারের পরামর্শ দেন ।
উল্লেখ্য, এগ্রোইকোলজি হলো একটি সমন্বিত কৃষিব্যবস্থা। যা প্রকৃতি, পরিবেশ, এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে কৃষিকাজকে সংযুক্ত করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী উপায়ে কৃষিকাজ করা, যা জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য পরিবেশগত সংকটের মোকাবেলায় সাহায্য করে। এই পদ্ধতিতে জৈব সার, জৈব কীটনাশক, এবং স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, যা মাটির স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে।