
ঢাকা, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর সংস্থাসমূহে সেবার মান বৃদ্ধি, সেবাগ্রহিতাদের হয়রানী রোধ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে আজ চুয়াডাঙ্গার ডিসি মঞ্চে দুদকের ১৮৮ তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গণশুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন প্রধান অতিথি, কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বিশেষ অতিথি ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যারা সেবাদাতা তাদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আসবে এটা খুবই স্বাভাবিক এবং এটাকে আপনারা সবাই স্বাভাবিকভাবে নেবেন। এটার কারণে সেবাগ্রহীতা যে অভিযোগ করবেন, তার ওপর ক্ষুব্ধ হবেন না, অসন্তুষ্ট হবেন না কারণ তিনি অসন্তুষ্ট এবং ক্ষুব্ধ বলেই অভিযোগ করছে। কাজেই আমরা কিভাবে সেই সমস্যার সমাধানগুলো তাড়াতাড়ি করতে পারি সেটা দেখব।
দুদক কমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, আপনার পাশে ছোট্ট একটা দুর্নীতি হতে যাচ্ছে, আপনি দেখেছেন আপনার আওতায় পড়ে না, তবুও আপনি যদি একটু একটু আওয়াজ দেন, দেখবেন তাৎক্ষণিকভাবে হয়তো যিনি দুর্নীতি করার চেষ্টা করছিলেন, তিনি ওখান থেকে সরে এসেছেন।
দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) বলেন, জনগণের জন্য প্রদত্ত সরকারি পরিসেবা স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এটা (গণশুনানি) একটা সুযোগ হিসেবে আপনারা দেখবেন। আপনার দপ্তরে কোন-কোন জায়গায় দুর্নীতি হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে এবং কিভাবে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটা আপনার চেয়ে ভালো কেউ কিন্তু আর জানে না। আমরা মনে করি, আপনি আপনার দপ্তরকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য এটাকে (গণশুনানি) একটা সুযোগ হিসেবে নেবেন।
গণশুনানিতে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। এতে বিভিন্ন সরকারি অফিসে সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানীর শিকার বা সেবা বঞ্চিত সংক্ষুব্ধ জনসাধারণ তাদের অভিযোগসমূহ চুয়াডাঙ্গা জেলার সব সরকারি দপ্তর প্রধানদের উপস্থিতিতে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। একই সঙ্গে সেবা বঞ্চিত জনসাধরণের উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে দুদক থেকে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এতে দুদকের তফসিলভুক্ত ৭৫টি অভিযোগের শুনানি হয়। যার মধ্যে একটি অভিযোগ অনুসন্ধানে নেয়া হয়, একটি অভিযোগে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয় এবং ৩৭ অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয় এবং বাকি অভিযোগসমূহ প্রতিবেদন দাখিল সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করা হবে।
সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যাবোধ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই গণশুনানির মূল অভিপ্রায়।
এর আগে গণশুনানিতে জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন এলাকায় সপ্তাহব্যাপী মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, বুথ স্থাপন করে অভিযোগ সংগ্রহ, অভিযোগ বাক্স স্থাপনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুদকের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছিল। উক্ত গণশুনানির বিষয়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। গণশুনানি সরাসরি সেবা দাতা কর্মকর্তা-কর্মচারী, সব শ্রেণি-পেশার নাগরিক এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।