
দিনাজপুর, ২৪ নভেম্বর ২০২৫(বাসস): নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী পিঠা উৎসব গতকাল জেলায় সমাপ্ত হয়েছে। দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। মহিলা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত নারী উদ্যোক্তা সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর শহরে লোক ভবন মাঠে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসব গতকাল রোববার রাতে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা সংস্কৃতি আমাদের লোকজ ইতিহাস, শিল্প-সংস্কৃতি ও গ্রামীণ জীবন যাপনের অপূর্ব সৌন্দর্যকে তুলে ধরে। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম যেমন আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, তেমনি নারী উদ্যোক্তা বিকাশ, স্থানীয় খাদ্য শিল্পের সম্প্রসারণ এবং সামাজিক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হচ্ছে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমরা সর্বদা এ ধরনের সৃজনশীল, সাংস্কৃতিক ও সমাজমুখী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ভবিষ্যতেও আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোরশেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. মারফত হোসাইন। শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু পরিবেশে তিন দিনব্যাপী এই পিঠা মেলা সমাপ্ত হওয়ায় তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মেলায় আগত ২৩ টি স্টলকে জেলা প্রশাসক ও মহিলা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
জেলা মহিলা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত ২৩ টি নারী উদ্যোক্তা সংগঠনের ২৩টি স্টলের অংশগ্রহণে গত ২১ নভেম্বর থেকে উৎসব মুখর পরিবেশে এ পিঠা মেলা শুরু হয়। গত তিন দিন মেলায় বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেলার সমাপনী দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকায় রাত ১২ টা পর্যন্ত পিঠা বেচাকেনা হয়।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, নিয়ামুল হক ও পারভেজ রানাসহ তাদের ১০ বন্ধু পিঠা মেলায় এসেছিলেন। তারা বলেন, শীতের শুরুতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই মেলার আয়োজন আমাদের ভালো লেগেছে। আমরা সব দোকান থেকেই পিঠা খেয়েছি। ভালো লেগেছে।
তারা বলেন, পড়াশোনার কারণে শীতের মৌসুমে বাড়িতে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই পিঠা মেলায় এসে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ অনুভবের চেষ্টা করছি।
মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায়, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, নারিকেল পিঠা, তেলের পিঠা, তিলের পিঠা, দুধ পিঠা, রসের পিঠা, ঝাল পিঠা, খেজুর গুড়ের পিঠা, পাটিসাপটা, গাজরের পিঠাসহ হরেক রকম পিঠা বিক্রি হচ্ছে। দামও ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রাখা হয়েছে। পিঠার দাম কম হওয়ায় সব শ্রেণি পেশার মানুষ পিঠা মেলায় এসে পিঠার স্বাদ অনুভব করেছেন।
মেলায় অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা বিলকিস বেগম জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য পিঠা মেলায় তিনি তার সংগঠনের পক্ষ থেকে স্টল দিয়েছিলেন। গত তিন দিনে তার বানানো সবগুলো পিঠাই বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, মুনাফা যা হয়েছে, তার চেয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে বেশি ভালো লেগেছে।