কক্সবাজার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : জেলা শহরের লাবণী পয়েন্ট মোড়ে কক্সকার্নিভ্যাল হলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত চাকরি মেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলা থেকে শত শত তরুণ-তরুণী এ মেলায় অংশ নেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় এ মেলার উদ্বোধন করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এই মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন জমা দেন ৮২৭ জন। তাদের মধ্যে ১১৯ জনকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে ৯ জনের চাকরি নিশ্চিত করা হয়।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে মেলাটির আয়োজন করা হয়। আতিথেয়তা, আইটি, নির্মাণ, তৈরি পোশাক, কেয়ারগিভিংসহ বিভিন্ন খাতের ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নেয়।
আয়োজকরা বলেন, এই মেলা দক্ষ তরুণ-তরুণীদের সাথে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যা স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বলেন, কক্সবাজার একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন নগর। ভবিষ্যতে এটি অর্থনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠবে। তাই এখানকার তরুণ-তরুণীদের বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষিত করে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা জরুরি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রকল্প ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই মেলা চাকরির পাশাপাশি দক্ষতা ও সুযোগের মধ্যে একটি কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘চাকরি মেলা আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ব্যক্তির দক্ষতাকে টেকসই জীবিকায় রূপান্তর করার পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য কক্সবাজারের তরুণ সমাজকে কর্মমুখী ও উদ্যোক্তায় পরিণত করা।’
তিনি জানান, চেম্বারের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৭৮০ জন তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তাদের মধ্যে ৪০০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব কাজী মোখলেসুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) এম এ খায়ের, বাংলাদেশ ট্যুরিজম করপোরেশনের পরিচালক মহিউদ্দিন হেলাল, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ফিরোজা আক্তার, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, আইএলও কর্মকর্তা নাবিদ আকবর ও হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান।
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আইএলও পরিচালিত আইজেক প্রকল্পের আওতায় এই চাকরি মেলার আয়োজন করা হয়। প্রকল্পটির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি তরুণ-তরুণী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ ইতোমধ্যে কর্মসংস্থানে যুক্ত হয়েছেন।