পার্বত্য অঞ্চলের ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভার নিয়ন্ত্রণ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের সুপারিশ

বাসস
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৪

ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): পার্বত্য অঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরিত হতে পারে বলে সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।

‘স্থানীয় সরকার বিভাগ’ প্রতিবছর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জাতীয় বাজেটের পার্বত্য অংশ ঐ মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করতে পারে বলেও সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১৮ নভেম্বর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি প্রজ্ঞাপনে প্রফেসর তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠিত হয়। 

কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু কাজ পরিপূর্ণভাবে শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে, তাই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন শেষ করতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে সরকার ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সংস্কার বিষয়ে আলোচনা করছে। তাই স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন আলোচনা ও ঐক্যমত্য উপনীত হবার প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য এ কমিশনের তৈরিকৃত প্রাথমিক কিছু মৌলিক সুপারিশ এখনই সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার জন্য উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। প্রাথমিক সুপারিশের সাথে আরও দুইটি অধ্যায় বিশেষত সারা দেশে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর মাধ্যমে ৪৬৬৮০ জন উত্তরদাতার মধ্যে পরিচালিত মতামত জরিপ এবং নির্বাচন বিষয়ক একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে।'

পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিষয়ে সুপারিশমালায় বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি ‘বিশেষ অঞ্চল’ স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ভৌগোলিক ভিন্নতা বিশেষত পাহাড়-নদী এবং এখানে বাঙালিসহ মোট ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর বসবাস। যাদের ভিন্ন ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, প্রথা-রীতি-পদ্ধতি ও সামাজিক আচার-আচরণ রয়েছে। এ অঞ্চলে প্রথাগত হেডম্যান কারবারী-সার্কেল প্রধান, বাজার ফান্ড, সংবিধিবদ্ধ ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ (বিশেষ আইনে গঠিত) এবং একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য তিন জেলা নিয়ে একটি ‘আঞ্চলিক পরিষদ’ রয়েছে। এ সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধুমাত্র ‘বাজার ফান্ড’ বিলুপ্ত করে বাকি ছয়টিকে অক্ষুণ্ন রাখা যেতে পারে। 

‘বাজার ফান্ড’ প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করে বাজার রাজস্ব আহরণের জন্য উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসিল্যান্ড) ও উপজেলা পরিষদ সভাপতির সভাপতিত্বে একটি কমিটির মাধ্যমে মুক্তভাবে প্রতিযোগিতামূলক নিলামে এসব রাজস্ব একটি কেন্দ্রীয় তহবিলে স্থানান্তর করে তা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা সার্কেল-চিফ ও জাতীয় সরকার-এর মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী ‘আনুপাতিক হারে’ বণ্টন করা যেতে পারে বলে সুপারিশে বলা হয়।

সুপারিশে আরো বলা হয়, জেলা পরিষদ আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ২০২৫ এর মধ্যে পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করা যেতে পারে। ১৯৮৯ এর পর পার্বত্য জেলা পরিষদে কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে এ পরিষদটি রাজনৈতিক বৈধতা হারাতে বসেছে। আঞ্চলিক পরিষদ আইনের সংশোধন এবং নির্বাচন বিষয়ে পরবর্তী জাতীয় সংসদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আপাতত যেভাবে আছে তা চলতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০২৬ সালের মধ্যে পৃথক জনবল, তিন স্তরে ভূমি জরিপ, ইউনিয়ন ও পৌরসভা ভিত্তিক নাগরিক তথ্য-ভাণ্ডার তৈরি করা প্রয়োজন বলে কমিশন মনে করে।

কমিশন তার সুপারিশে আরো উল্লেখ করেছে, প্রচুর কর্মসংস্থান, জন-নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং সীমান্তের বাইরের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হলে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা টেকসই হবে না তাই ক্ষুদ্র-বৃহৎ সকল জাতি গোষ্ঠির শাসন ও উন্নয়নে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করাই হবে পার্বত্য চট্রগ্রাম স্থানীয় সরকারসমূহের মূল লক্ষ্য ও কাজ ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ডাকসু ও হল সংসদে নির্বাচিতদের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত
কুয়াকাটা মহাসড়কে পাঁচ বাসে অভিযানে ৯০০ কেজি জাটকা জব্দ
জাতীয় জীবন ও বৈশ্বিক স্তরে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা
৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তিন প্রতিষ্ঠানে দুদকের অভিযান
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে এগিয়ে নিতে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বিকল্প নেই : বিইপিআরসি চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ ও জাপানের কৃষি বিষয়ক যৌথ কার্যকরী গ্রুপের ২য় সভা অনুষ্ঠিত
৩৩২ কোটি টাকায় ‘রোজ গার্ডেন’ কিনে রাষ্ট্রের ক্ষতি, অনুসন্ধানে দুদক
অবৈধভাবে আমদানি ও চোরাচালানকৃত এবং ক্লোন ফোন বন্ধ করা হবে : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের নিবন্ধনে ইসির পরিপত্র
১০