গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা এখনো পাইনি: মির্জা ফখরুল

বাসস
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫৮
আজ জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপির) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদ তাড়িয়েছি গণতন্ত্র ফিরে পেতে। কিন্তু সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার এখনো নিশ্চয়তা পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পরে দেশের মানুষ অনেক আশা-ভরসা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন, অতি দ্রুত দেশে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবেন। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে। কিন্তু আমরা দু:খের সঙ্গে দেখছি, এখনো পর্যন্ত সেই লক্ষ্যে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা পাচ্ছি না।’ 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় দেওয়া স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। বক্তব্যের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে এবং দেশের ভেতর থেকে একটা পক্ষ প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা অখণ্ড বাংলার বিখ্যাত মনীষীদের নামে থাকা স্থাপনাগুলো থেকে তাদের নাম সরিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে নামকরণের কথা বলে একটা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

বিএনপির নিরন্তর সংগ্রামের কারণে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কী পরিমাণ ত্যাগের বিনিময়ে বিএনপির মতো একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক দল নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। এরই ফলশ্রুতিতে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন-দিন অবণতির দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার কোনো পরিবেশ থাকছে না। এ অবস্থা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ না পেলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। 

নেতাকর্মীদের প্রতি শুকরিয়া জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ১৬ বছরে বিশেষ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, গুম, খুনের শিকার হয়েছেন। ৬০ লক্ষ্য মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে গোটা জাতিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো। আজ আপনাদের প্রাণভরে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আপনারা মাঠে থেকে বিএনপিকে শক্তিশালী করার মরণপণ চেষ্টা করেছেন। 

এর আগে, কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বর্ধিত সভা শুরু হয়। দেশের চলমান পরিস্থিতি, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং মিত্র দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখা এই চার এজেন্ডা সামনে রেখে এবারের বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। বর্ধিত সভার প্রথম সেশন দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে দ্বিতীয় রুদ্ধদ্বার সেশনটি শুরু হয় বিকেলে।  

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দলের বর্ধিত সভা ডেকেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই সভার পর ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে একটি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়।

বর্ধিত সভায় দলের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা ছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং যারা মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক চিঠি পেয়েছিলেন তারাও উপস্থিত আছেন। সভা মঞ্চে আসন নিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যরা আছেন প্যান্ডেলের সামনের সারিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইউনেস্কো মহাপরিচালক প্রার্থী গাব্রিয়েলা রামোস পাতিনার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় না : ধর্ম উপদেষ্টা
বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে : আসিফ নজরুল
পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার : চীনের রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা
উত্তরায় টাকাসহ ছিনতাইকারী গ্রেফতার
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ শেষে লোকালয়ে ফিরছে মৌয়ালরা
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করতে হবে: ইসলামী যুব আন্দোলন 
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নরের সাক্ষাৎ 
ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা দরকার: আমির খসরু
১০