আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম একটি অনন্য ও ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান : প্রধান উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৮:৪৫ আপডেট: : ০৩ মার্চ ২০২৫, ২০:৫৮
আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

ঢাকা, ৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম কেবল মাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে এতো দীর্ঘমেয়াদে টিকে আছে তা নয়, তারা বেওয়ারিশ লাশ দাফনের পাশাপাশি এতিম শিশুদের লালনপালন করার মধ্যদিয়ে শক্তভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমন প্রতিষ্ঠান উপমহাদেশে আর খুঁজে পাওয়া যাবে কি-না আমার জানা নেই। এটি ঐতিহাসিক ও অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আজ রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের নতুন ভবন আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন করেন। পরে তিনি এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করেন।

অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘যত দুর্গম ও কঠিন পরিস্থিতি হোক না কেন, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম বেওয়ারিশ লাশ দাফন করে এবং সারা দেশ জুড়ে তারা কাজটি করে যাচ্ছে। বিশেষ করে মহামারি ভাইরাস করোনার সময় এই প্রতিষ্ঠানের নাম বারবার এসেছে।’

আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কখন কোথায় বেওয়ারিশ লাশ পড়ে আছে, তার জন্য অপেক্ষা করে থাকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। অথচ তারা এটা নিয়ে কখনো পত্রপত্রিকায় বিবৃতি বা সংবাদ প্রচার করে না। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে, মুসলিম সমাজের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের নাম জড়িয়ে রয়েছে। এটি আমাদের সমাজের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। 

আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম ভবনে তাদের কার্যক্রম সশরীরে দেখার সুযোগ পাওয়ায় তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন বলে উল্লেখ করেন।

কোথাও আর কোন বেওয়ারিশ লাশ দেখতে চান না উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম বেওয়ারিশ লাশ দাফনের কাজ চালিয়ে যাক, তবে আমাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য হতে হবে আর যেন কোনো বেওয়ারিশ লাশ না থাকে। আসুন আমরা এমন একটা সমাজ তৈরি করি, যেখানে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম যে লাশ দাফনের কাজ করছে, সেটি আর থাকবে না। দাফন করা ভালো কথা কিন্তু আমাদের লক্ষ্য কারো লাশ যেন বেওয়ারিশ না থাকে। আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকে চেষ্টা করতে হবে কেউ যেন মৃত্যুর পরে বেওয়ারিশ না হয়।’

সমাজের বিদ্যমান দুর্বলতা দূর করার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যে দুর্বলতাগুলো সমাজে আছে, আসুন আমরা সেগুলো যেন দূর করতে পারি। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে মনোযোগ দিয়ে সমাজের জন্য কাজ করি।’

যারা দীর্ঘদিন শ্রম, মেধা ও অর্থ দিয়ে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচি আরও বহু দিকে সম্প্রসারিত হোক এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।

৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের নতুন ভবন ‘আঞ্জুমান জে আর টাওয়ার’ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভ্যাট মওকুফসহ সরকার ২৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে। বাকি অর্থ ব্যক্তি পর্যায়ের অনুদান থেকে পাওয়া গেছে।

ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের ট্রাস্টি গোলাম রহমান, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সভাপতি মুফলেহ আর ওসমানী বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা বিস্তারে ভূমিকা রাখতে সার্ক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের এআই জেনারেটেড ডিপফেক ভিডিও এড়িয়ে চলার অনুরোধ
মোস্তফা মোহসীন মন্টু’র দাফন সম্পন্ন : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন
সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৬৩৬ জন
বিদেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান তদারকিতে ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন
৫৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কেউ কাজ করেনি : এ টি এম মাসুম
গুমের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে মনোনয়ন
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সাথে ডব্লিউজিইআইডি’র প্রতিনিধি দলের বৈঠক
গুমের ঘটনায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুস্পষ্ট যোগসূত্র দেখেছে কমিশন
১০