ঢাকা, ২৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, কমনওয়েলথ সনদ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও অন্যান্য মূল্যবোধের প্রতি সম্মিলিত বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা।
তিনি আজ গুলশানের লেকসোর হাইটস হোটেলের সম্মেলন কক্ষে কমনওয়েলথ চার্টার কর্মশালার উদ্বোধনকালে বলেন, এটি ৫৬টি দেশের ২ দশমিক ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষের জন্য নৈতিক দিক-নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে।
২০১৩ সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে সনদটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে শান্তি ও সম্প্রীতির ভিত্তিতে সমাজকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কমনওয়েলথ সনদে অন্তর্নিহিত মূল্যবোধ- যেমন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন ও আইনের শাসন সম্পর্কে শেখার মাধ্যমে আমাদের যুবসমাজ চলমান জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
উপদেষ্টা সকলকে আলোচনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত হতে, ধারণাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে ও আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে রূপ দিতে পারে, এমন ব্যবহারিক সুপারিশগুলো প্রস্তাব করতে উৎসাহ প্রদান করেন।
আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা নির্মমভাবে দমন করা হয়েছিল, ভোটাধিকার ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করা হয়েছিল ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে খর্ব করা হয়েছিল। এছাড়া, বড় আকারের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার দেশের সম্পদ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিঃশেষ করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এগারোটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। নাগরিক, বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ সংগঠন ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ১২১টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরিধি ও সময়সীমা নির্ধারণের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। একই সাথে কমিশন জুলাই সনদের চূড়ান্তকরণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। যা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখবে, বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করবে। এই উদ্যোগগুলো জুলাইয়ের বিদ্রোহের চেতনার প্রতি আমাদের যৌথ অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো আপস করা হবে না এবং সকল মানুষের অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা সুরক্ষিত থাকবে।’
কমনওয়েলথ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে প্রায় ১০০ জন যুব ও যুব নারী প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।