ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : গত বছর ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয়জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ এই আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য প্রসিকিউশন আবেদন করেছিল। অন্যদিকে, আসামীপক্ষ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিল। গত ৩ জুলাই শুনানি শেষে আজ এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করা হয়।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, বিএম সুলতানা মাহমুদ ও গাজী এমএইচ তামিম।
অপরদিকে, এই মামলায় গ্রেফতার আসামি সাবেক ইন্সপেক্টর আরশাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি, আসামি কনস্টেবল মো. সুজনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ, আসামি কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিবলী সাদেকীন ও আসামি কনস্টেবল নাসিরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবুল হাসান। অন্যদিকে, পলাতক ৪ আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিন।
পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন— ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)’র সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পরেও পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্র তাদের জন্য আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয়জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গত ২৫ মে আমলে নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আদালতে অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা চানখাঁরপুল এলাকায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়াকে হত্যা করেছে। এরা সকলেই শহীদ হন।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশের ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার এখন দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলছে।