পটুয়াখালী, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা আর অনৈক্য ও বিভাজন চাই না। কিন্তু যদি জনগণের বিরুদ্ধে বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কোনো শক্তি দাঁড়ায় তবে অবশ্যই তাদের সাথে আমাদের ঐক্য সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মুজিববাদ একটি বিভাজন তৈরি করেছে। মুজিববাদী সংবিধান বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে এগোতে দেয়নি। কিন্তু সেই মুজিববাদী সংবিধান, সেই বাহাত্তরের সংবিধানকে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে একটি রাজনৈতিক দল।’
তিনি আজ পটুয়াখালী সার্কিট হাউজের সামনে এক সভায় এসব কথা বলেন। এর আগে স্থানীয় সার্কিট হাউজ থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। পদযাত্রাটি নিউমার্কেট, সদর রোড, লঞ্চঘাট, পুরানবাজার, হোটেল বনানী এলাকা হয়ে আবারও সার্কিট হাউজে এসে শেষ হয়। সভাশেষে তিনি পটুয়াখালীতে এনসিপি’র অফিস উদ্বোধন করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছিল, অভ্যুত্থানের পরে সেই একই সিস্টেম, দুর্নীতি-মাফিয়াদের সিস্টেম আমাদের বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। আমরা বলেছিলাম শত্রু বাংলাদেশের ভিতরে নয়, শত্রু বাংলাদেশের বাইরে রয়েছে। সেই বাইরের শত্রুর বিরুদ্ধে দেশের সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু বার বার বাংলাদেশের ভিতরেই আমাদের বিরুদ্ধে বিভাজন তৈরি করে রাখা হয়েছে। যাতে আমরা দুর্বল থাকি, যাতে আমাদের ভেতর অনৈক্য থাকে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্যোশাল মিডিয়া থেকে শুরু করে গণমাধ্যমেও আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। পটুয়াখালী থেকে ঘোষণা করতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন, আমাদের এই পদযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আপনারা ভয়ের সংস্কৃতিকে তোয়াক্কা না করে সামনে এগিয়ে যাবেন।’
নাহিদ আরো বলেন, ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আজকে রয়েছে পটুয়াখালীতে। জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরের দ্বারপ্রান্তে আমরা। এই এক বছর আগে বাংলাদেশের ছাত্র-তরুণ-জনতা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে। গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমরা বলেছিলাম যে, মাফিয়া দুর্নীতিবাজ সিস্টেমের পতন ঘটাতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি, সেই সিস্টেমকে পাহারা দেয়ার জন্য নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। সেই সিস্টেম, সেই চাঁদাবাজি আগে একটি দল পাহারা দিত, এখন নতুন আরেকটি দল পাহারা দিচ্ছে।
মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, পটুয়াখালী জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিরা।