জিয়া অরফানেজ মামলায় আপিলে খালাসের রায়ের পর্যবেক্ষণে যা বলা হয়েছে

বাসস
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৫
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালাসের রায়ের ফলে এই মামলার আপিলকারী ও অন্য দোষীদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার হবে, নির্দোষ পুনঃনিশ্চিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে হওয়া অযৌক্তিক কার্যক্রমের অবসান ঘটাবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এই মামলায় সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনের কল্পিত অপপ্রয়োগের প্রকাশ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে রায়ের পর্যবেক্ষণে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, এই মামলার আপিলকারী ও অন্য দোষীদের মর্যাদা আজকের রায়ের ফলে পুনরুদ্ধার হবে, তারা যে নির্দোষ তা পুনঃনিশ্চিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে হওয়া অযৌক্তিক কার্যক্রমের অবসান ঘটাবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দেওয়া রায়ে আজ এ পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়।

মামলায় খালেদা জিয়াসহ তিনজনের করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে আজ এ রায় দেন। এ মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। এই মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে তারেক রহমানসহ যাদের সাজা হয়েছিল ও আপিল করতে পারেননি, তারাও খালাস পেয়েছেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তারেক রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আনা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি ছিল বিদ্বেষপূর্ণ প্রতিহিংসাবশত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। এটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ।

বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন। সে অনুযায়ী আইনি লড়াই চালিয়ে যান বেগম খালেদা জিয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নীলফামারীতে ১২ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান
ইতালির নাগরিকত্ব পাচ্ছেন জনপ্রিয় মার্কিন লেখক ফ্রান্সেস মায়েস
কিশোরগঞ্জে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের চারলাখ টাকা জরিমানা
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘বিশ্ব হিমোফিলিয়া’ দিবস পালিত
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা : মামলার দুই আসামী আটক
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট পরিসংখ্যান
শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে বহিষ্কার ৮ শিক্ষার্থী, প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের
আইপিএল: বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে পাঞ্জাব
১০