চট্টগ্রাম, ২৬ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে শত সংস্কার করেও নতুন বাংলাদেশ গড়া যাবে না। বাংলাদেশকে বদলে দিতে হলে আগে রাজনৈতিক সহনশীলতা প্রয়োজন। ভিন্নমত পোষণ করলেও প্রতিপক্ষের প্রতি সহনশীল আচরণ করতে হবে।
যারা জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব এককভাবে নিতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের পথ ধরে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দেশের সব মানুষের আন্দোলন, এই আন্দোলন যাতে দ্বিধাবিভক্ত না হয় এজন্য বিএনপি তার একক কৃতিত্ব কখনো নিতে চায় না, চাইবেও না। এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করে কোনো বিভাজন তৈরির পক্ষে নয় বিএনপি।
আজ শনিবার বিকেলে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির আলোচনা সভা ও পেশাজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, চট্টগ্রাম শাখা এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যেমন মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব এককভাবে নিতে চেয়েছিল তেমনি করে একটি পক্ষ এখন এককভাবে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের কৃতিত্ব নিতে চায় উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির এত মানুষের যে আত্মত্যাগ, সেটা এখন আবার অনেকে ভুলে যেতে বসেছে। জুলাই বিপ্লবের কথা বলতে গেলে ১৬ বছরের আন্দোলনে যাদের অবদান আছে, তাদের সবার কথা বলতে হবে এবং এটা শুরু করতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দিয়ে। এই আন্দোলনের এক নম্বর অবদান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, এটাও কিন্তু অনেকে বলতে ভুলে গেছে। দেশনায়ক তারেক রহমান বছরের পর বছর এ আন্দোলনের জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সেই কথাটাও কিন্তু জুলাইয়ের আলোচনায় খুব কম করে আসছে। আসলে এই আন্দোলনের মূল নায়ক তো ছিলেন তারেক রহমান আর সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ যেটা, সেটা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বক্তব্য এটা দিয়েই শুরু করতে হবে, যাদের কারণে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।’
জুলাই আন্দোলনে বিএনপির ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ১৬ বছর যে মানুষগুলো একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেটা কিন্তু আলোচনায় আসছে না। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে গেছে, পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, চাকরিচ্যুত হয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে পারেনি, বেশিরভাগ সময় কোর্ট-কাচারিতে কাটিয়েছে। শহীদ ওয়াসিমের নামটা পর্যন্ত আমি ঢাকায় কোথাও দেখি না। যে জুলাই আন্দোলনে প্রথম শহীদ ওয়াসিম, তার নামটা কোথাও আলোচনায় নেই।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব হাসান আলী চৌধুরী ও মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখার ইসলাম লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, এ্যাবের সভাপতি জানে আলম সেলিম, সিএমইউজের সাবেক সভাপতি শামসুল হক হায়দরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুস্তাফা নঈম, বার কাউন্সিলের সদস্য এ এস এম বদরুল আনোয়ার, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান।
সমাবেশে ‘আওয়ামী দুঃশাসন’ ও জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।