পঞ্চগড় ২৬ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের পর প্রথমবারের মত নিজ জেলায় অবস্থান করছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এলাকায় নির্বাচনী আলোচনায় থাকলেও এবার ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। বর্তমান নিজ নির্বাচনি এলাকার গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ব্যাপক জনসংযোগ করছেন সারজিস আলম।
বুধবার তৃতীয় দিনের মত দিনব্যাপী নিজ জেলা পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর ধামোর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ চালান জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা। ভ্যানে করে এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে যান, করেন পথসভা। সারজিস আলমকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত গ্রামের শিশুরাও। তার সঙ্গে ‘এনসিপি’ বলে স্লোগানও ধরেন তারা। সারজিসের ভাষ্য, আমরা তরুণ প্রজন্ম একসাথে হয়ে যারা এই গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি এবং পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি করতে ইচ্ছুক- আমরা সে জায়গা থেকে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি।
সারজিস আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি গ্রাম-গঞ্জ, ইউনিয়নে এবং উপজেলায় নতুন দল এনসিপির পক্ষ থেকে গিয়ে মানুষের সাথে কাজ করতে চাই। কারণ আমরা যারা জনপ্রতিনিধি হতে চাই। তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আসল জিনিসটা বুঝতে পারবো। মানুষ কিভাবে আছে বা তারা কি চায়।
এসব গ্রামের মানুষ পূর্বে নৌকায় ভোট দিয়েছে কিংবা দাড়িপাল্লায় ভোট দিয়েছে বা ধানের শীষে ভোট দিয়েছে। আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। তারা যদি তাদের জায়গা থেকে মনে করেন, আগের সব কিছুর চেয়ে এনসিপির কাছে বেশি আশা দেখেন। তারা যদি মনে করেন এনসিপির উপর তারা আস্থা রাখতে পারবেন। তারা যদি আমাদের কাছে আসতে চায়। অতীতে কোনো বড় অন্যায় অপকর্ম খুন গুমের সাথে জড়িত ছিল না। এখন তারা যদি এসে আমাদের পাশে দাঁড়ায়। আমি তাদেরকে সরিয়ে দিতে পারব না। কারণ উনি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। লোক হিসেবে যদি ভালো হয়। আমি তো একটা নতুন দলের প্রতিনিধি, নতুন দলের মার্কা থাকবে। আমি কি ওই লোকটাকে তাড়িয়ে দিতে পারি? আমরা একটা দল শুরু করেছি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি- যারা নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, এই দেশটাকে নিয়ে ভালো কাজ করতে চায়, ভালো কিছুর সাথে থাকতে চায় তাদেরকে আমাদের জায়গা থেকে ঐটুকু ভাল কাজ করার সুযোগটা দিতে হবে।
শেখ হাসিনার প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, হাসিনা যে দেড় হাজার মানুষকে খুন করেছে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, এটাও আমাদের বলতে হবে। কারণ সে ক্ষমতায় জনগণের ভোট নিয়ে যায়নি। বিগত তিনবার কোন নির্বাচন হয়নি। প্রত্যেকটি ভোটে কারচুপি হয়েছে। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যারা ছিলেন, তাদেরকে ভোট সেন্টারে ঠিক মতো ঢুকতে দেয়নি। তাদেরকে ঠিকমতো প্রার্থী হতে দেয়নি। বাড়িতে থাকতে দেয় নাই। জনগণ সাক্ষী দিবে সেই সময় কি হয়েছে। এই দায়গুলো দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে নিতে হবে। যেই মানুষটা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সন্তানের মত দেড় হাজার মানুষকে মেরে ফেলছে। ওই মানুষটার বাংলাদেশের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না।