ঢাকা, ১০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ৩০ ও ৩১তম বিসিএসে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) -এর সুপারিশ ছাড়াই ৪১ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে আজ এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় থেকে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, এসআরও নং ৫৫-আইন/২০১২ জারির মাধ্যমে বিধি ১৬এ সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে। এই বিধির আলোকে পিএসসির প্রথম ধাপে প্রকাশিত ফলাফলে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের মধ্যে পরবর্তীতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিতিজনিত শূন্য পদে চাকুরি না পাওয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারে (১৮ জন প্রার্থীকে ৩০ তম বিসিএসের মাধ্যমে ও ২৩ জনকে ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে) নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের নিয়োগ প্রদান করা হয়।
এ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ বিধিসম্মত হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের নিমিত্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসি হতে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্র প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যালোচনা করে টিম কমিশনের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এদিকে, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে রেল ভবনে অপর একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় এনফোর্সমেন্ট টিমের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, বর্ণিত রেলপথের মূল ডিজাইনে ৭.৩ মিটার গড় উচ্চতা হিসাবে হলেও সংশোধিত গড় উচ্চতা নির্ধারণ করা হয় ৫.৬ মিটার, যা গড়ে ১.৭ মিটার কম। সে অনুযায়ী মাটি ভরাটসহ চুক্তির বিওকিউ পরিমাণের চেয়ে কম পরিমাণে কাজ সম্পাদন করা হয়। তা সত্ত্বেও ঠিকাদারকে বিওকিউতে উল্লিখিত পরিমাণের শতভাগ বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
সার্বিক বিবেচনায় এ প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়/আত্মসাৎ হয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। এ বিষয়ে উক্ত প্রকল্পের চুক্তিপত্র, ঠিকাদারকে মূল্য পরিশোধ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, অডিট আপত্তি রিপোর্ট সরবরাহের জন্য চাহিদাপত্র প্রদান করা হয়।
এছাড়া বগুড়ার কন্দাল ফসল গবেষণা উপ-কেন্দ্রে সরকার নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় কম দামে ধান বিক্রয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের বগুড়া জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে টিম ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) -এর সাথে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলে এবং প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। টিম পরবর্তীতে উপ-কেন্দ্রের বিভিন্ন গবেষণা প্লট ও ধান চাষের জায়গা পরিদর্শন করে।
এদিকে, কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে ৬টি উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের শুরুতে প্রকল্প অফিস থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আংশিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে ওই সাফারি পার্কে কর্তব্যরত ফরেস্টার এবং প্রকল্প সুপারভাইজার ইঞ্জিনিয়ারের উপস্থিতিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। টিমের পর্যবেক্ষণে ওই প্রকল্পে অনিয়ম এবং দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। টিম কর্তৃক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অবশিষ্ট রেকর্ডপত্র প্রেরণের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, চট্টগ্রাম বরাবর চাহিদাপত্র প্রদান করা হয়েছে।