ঢাকা, ১৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : টেলিগ্রামের মাধ্যমে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি করে অর্থ পাচারের অভিযোগে প্রতারক চক্রের সদস্য নয়ন আলীকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রথমে হোয়াটঅ্যাপে অজ্ঞাত নম্বর থেকে লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞাপন পাঠানো হয় ভুক্তভোগীর কাছে। অল্প সময়ে ও পরিশ্রমে ঘরে বসে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে কাজের নির্দেশনা দেয়া হয় টেলিগ্রামে। কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করার পরপরই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) যেমন বিকাশ, নগদ কিংবা রকেটের মাধ্যমে বেতন প্রদান করা হয়। এতে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারক চক্রটি।
বিশ্বাস অর্জনের পর প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ‘টাস্ক’ কিনতে লোভনীয় অফার দেয়। বিনিয়োগ করলেই শুরু হয় বিভিন্ন টালবাহানার মাধ্যমে অর্থ নেওয়া। এরপর সেই অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি করে বিদেশে পাচার করে চক্রটি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন আলী জানায়, তার ব্যবহৃত দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ রকম অন্যান্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে সর্বমোট আনুমানিক ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছে নয়ন।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাকৃত নয়ন আরও জানায়, সে তার পরিচিত চাচা জুহুরুল ইসলামের (৪০) মাধ্যমে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়। চক্রটির মূল হোতা মেহেদী হাসান ও জুহুরুল ইসলামের নির্দেশে নয়ন নিজের ও তার বোন মাসরুফার ডাচ-বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণার কার্যক্রম সম্পন্ন করত।
এই প্রতারক আরো জানায়, প্রতি লাখ টাকা লেনদেনের জন্য সে ১ হাজার টাকা কমিশন পেত। এভাবে গত তিন মাসে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় করেছে বলে স্বীকার করে। এই অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি হয়ে বিদেশে পাচার করেছে নয়ন।
নয়ন আলীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরণ ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাধারণ মানুষকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা যেকোনো ধরনের বিনিয়োগের অফার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছে সিআইডি। এছাড়া সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে ০১৩২০০১০১৪৬, ০১৩২০০১০১৪৭, ০১৩২০০১০১৪৮ এ সকল নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে।