খুলনা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে জনগণ শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়। তারা আর আগের মত শাসনে ফিরে যেতে চায় না। তার প্রমাণ হলো সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন।
আজ রোববার খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয় অডিটরিয়ামে শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবক সমন্বিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অতীতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন আবাসিক হলগুলোতে গেস্টরুম, গণরুম কালচারের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর অকথ্য জুলুম, নির্যাতন চালিয়েছে।
আবার দলের অন্তঃকোন্দলে মারামারি, অস্ত্রের ঝনঝনানিতে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়েছে। বুয়েট, ঢাবি ও রাবির মেধাবী শিক্ষার্থী যথাক্রমে সনি, আবু বকর ও শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা। এরকম দেশ স্বাধীনের পর থেকে শত শত মেধাবী শিক্ষার্থী তার নিজ ক্যাম্পাসে হত্যার শিকার হয়েছে। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা নীরব ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের শোচনীয় পরাজয় ঘটিয়েছে। জনগণ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে নীরব ব্যালট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশের পুরোনো শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে একটি নতুন জনকল্যাণমুখী, কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণের।
গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, জনগণ এখন আর কর্তৃত্ববাদী শাসন পছন্দ করে না। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার অব্যাহত খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, রাহাজানি, সন্ত্রাসী, মাস্তানি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের মাধ্যমে এদেশের ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষের উপর জেঁকে বসেছিল। জনগণ ভেবেছিল এ অবস্থা হতে আর মনে হয় পরিত্রাণ পাবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন নেমে এক দুর্দান্ত প্রতাপশালী ক্ষমতালোভী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। এখন ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ জনগণ এখন তাদের মত প্রকাশ করতে পারছে। এ কারণেই জনগণ এখন অনুরূপ কোনো শাসন ব্যবস্থাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে চায়না। আসতে চাইলে সেটিকে তারা লালকার্ড দেখাবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী স্পষ্ট করে বলেছে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া যে সংবিধানের কারণে একটা সরকার এত প্রতাপশালী হয়ে উঠেছে এত মানুষকে আহত ও হত্যা করেছে জুলাই সনদের লিখিত স্বীকৃতির মাধ্যমে সেই সংবিধানের ন্যূনতম সংশোধন এনে তারপর নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে এই সংবিধানের আলোকে আবার যদি নির্বাচন হয় তাহলে যারাই ক্ষমতায় আসবে তাদের আবার স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ হয়ে উঠার সুযোগ থেকে যাবে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সংবিধান সংশোধন করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মুক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা নায়েবে আমির গাজী সাইফুল্লাহ ও মাওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্রশিবিরের খুলনা জেলা সভাপতি ইউসুফ ফকির, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মন্ডল। স্বাগত বক্তৃতা করেন কলেজ অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সরদার।