ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনা, কক্সবাজার ও পিরোজপুর জেলা কার্যালয় থেকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানের লক্ষ্য ছিল হাসপাতাল সেবা, স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্প এবং এলজিইডি বাস্তবায়িত সড়ক ও সেতু প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ যাচাই করা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানের সময় টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এবং সেবাপ্রার্থীদের বক্তব্য নেয়।
ছদ্মবেশে অবস্থানকালে দালালদের ব্যাপক দৌরাত্ম্য নজরে আসে। এসময় দুইজন দালালকে হাতেনাতে ধরা হয় এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেডিকেল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া অভিযোগ আসে যে, বকশিশ না পাওয়ার কারণে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী মুমূর্ষু রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিয়েছিলেন, যার ফলে রোগীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এদিকে কক্সবাজারের ১নং ইসলামপুর ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার না করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন না করে তা আত্মসাৎ করার। এ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় কক্সবাজার থেকে একটি অভিযান পরিচালনা করে। টিম সরেজমিনে গিয়ে একজন নিরপেক্ষ উপসহকারী প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে অভিযোগে উল্লিখিত প্রকল্পগুলোর পরিমাপ সম্পন্ন করে। পরিমাপ প্রতিবেদন এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের আলোকে কমিশনকে বিস্তারিত এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এছাড়া ভান্ডারিয়া উপজেলায় এলজিইডি’র সড়ক ও সেতু তিনটি প্রকল্পে ৩৪৩ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা হয়। নদমুল্লা ইউনিয়নের মাদ্রাসা হাট-চিংগুড়িয়া-কলোনি বাজার সড়কে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ না করে অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
দুদকের তিনটি অভিযানই প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। হাসপাতাল সেবায় দালালদের দৌরাত্ম্য, স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্প ও এলজিইডি বাস্তবায়িত সড়ক-সেতু প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ সংগৃহীত হয়েছে। প্রতিটি অভিযানের বিস্তারিত প্রতিবেদন দ্রুত কমিশনে দাখিল করা হবে।