ঢাকা, ২৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ব্যাটিং ব্যর্থতায় তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারল না স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে ৭৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৭ উইকেটে ও ৮ রানে জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল টাইগাররা। তৃতীয় ম্যাচ হেরে যাওয়ায় পাকিস্তানকে প্রথমবারের মত হোয়াইটওয়াশের সুযোগ হাতছাড়া করল লিটন দাসের দল।
এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার শাহিবজাদা ফারহানের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৮ রান করে পাকিস্তান। ফারহান ৪১ বলে ৬৩ রান করেন। জবাবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৬.৪ ওভারে ১০৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে পাকিস্তান। পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলেন দুই ওপেনার শাহিবজাদা ফারহান ও সাইম আইয়ুব। সপ্তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ২৯ বল খেলা ফারহান।
অষ্টম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। ডিপ মিড উইকেটে শামীম হোসেনকে ক্যাচ দেন সাইম। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫ বলে ২১ রান করেন সাইম।
দলীয় ৮২ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফারহান। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৪১ বলে ৬৩ রান করা ফারহানকেও শিকার করেন নাসুম।
মিডল অর্ডারে মোহাম্মদ হারিসকে ৫ রানে তাসকিন আহমেদ এবং হুসেন তালাতকে ১ রানে থামান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
তবে চার নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন হাসান নাওয়াজ। আগের দুই ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। এবার বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৩ রান করে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামা শরিফুল ইসলামের শিকার হন হাসান।
১৬তম ওভারে ১৩২ রানে ৫ উইকেট পতনের পর পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান অধিনায়ক সালমান আঘা ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। ২৩ বলে ৪১ রানের জুটিতে দলের রান ১৭০ পার করেন তারা। উদ্বোধনী জুটির পর এটি পাকিস্তানের ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
শেষ ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ নাওয়াজকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ২টি করে চার-ছক্কায় ১৬ বলে ২৭ রান করেন মোহাম্মদ নাওয়াজ।
ঐ ওভারে ফাহিম আশরাফকেও ৪ রানে শিকার করেছেন তাসকিন। তাই শেষ ওভারে ৫ রান দিয়ে পাকিস্তানের ২ উইকেট নেন তাসকিন। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৮ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান।
সালমান ১২ ও আব্বাস আফ্রিদি ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
৪ ওভারে ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার তাসকিন। এছাড়া নাসুম ২২ রানে ২টি এবং শরিফুল ও সাইফুদ্দিন ১টি করে উইকেট নেন।
১৭৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পেসার সালমান মির্জার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরেন তানজিদ হাসান।
দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম আশরাফের বলে বোল্ড হয়ে ৮ রানে সাজঘরে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস।
লিটনের বিদায়ে ২ বাউন্ডারিতে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু ৯ রানে ফাহিমের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি।
৪ ওভারে ২৪ রানে ৩ উইকেট পতনে চাপে পড়া বাংলাদেশকে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় ফেলেন সালমান।
পঞ্চম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে ২ উইকেট তুলে নেন সালমান। দুর্দান্ত দুই ডেলিভারিতে জাকের আলিকে ১ রানে এবং মাহেদি হাসানকে শূন্যতে বোল্ড করেন সালমান।
এরপর শামিম হোসেন ৫ ও ওপেনার নাইম ১০ রানে ফিরলে ৪১ রানে সপ্তম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতে নিজেদের টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন ৭০ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা।
অষ্টম উইকেটে নাসুমের সাথে ২৪ এবং নবম উইকেটে তাসকিনকে নিয়ে ১৬ রান যোগ করে বাংলাদেশকে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করেন সাইফুদ্দিন।
৮১ রানে নবম উইকেট পতনের পর হুসাইন তালাতের এক ওভারে সাইফুদ্দিন ও শরিফুলের তিন ছক্কায় ২১ রান তুলে দলীয় স্কোর ১শ পার করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে শেষ ব্যাটার হিসেবে শরিফুল আউট হলে ১০৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। শরিফুল ৭ রান করেন। সাইফুদ্দিন ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
সালমান মির্জা ৩টি, ফাহিম ও মোহাম্মদ নাওয়াজ ২টি করে উইকেট নেন।