পিরোজপুর, ৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): জেলার নেছারাবাদ উপজেলার প্রায় ২০০ বছরের পুরাতন আটঘর-কুড়িয়ানা পেয়ারা বাগান ও এর ভাসমান বাজার বর্তমানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত।
এসব বাগানের পেয়ারা মূলত নৌকায় করে ভাসমান বাজারেই বিক্রি করা হয়। তবে পর্যটকরা চাইলে সরাসরি বাগান থেকেও পেয়ারা কিনতে পারেন।
স্থানীয়ভাবে এ পেয়ারা ‘স্বরূপকাঠির গৈইয়া’ নামে পরিচিত। পিরোজপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পেয়ারা কিনে নিয়ে যান। এছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই রয়েছে এখানকার পেয়ারার সুনাম।
সম্প্রতি স্বপরিবারে এ বাগান ঘুরে গেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ড.আব্দুল ওহাব সাইদানি। এছাড়া প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে পর্যটকরা আসছেন এ বাগানে। বর্তমানে পর্যটকদের ভিড়ে এলাকা মুখরিত।
স্থানীয় আদমকাটি গ্রামের কৃষক সুভাষ মন্ডল বলেন, এ বছর পেয়ারার ফলন এবং বিক্রি দুটোই ভালো। এখন পর্যটকদের কারণে আমাদের আয় ও বেড়েছে। অনেকেই নৌকা, হোটেল, গাইড সার্ভিস দিয়েও রোজগার করছেন।
তিনি বলেন, পেয়ারা বাগানকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট হোটেল, খাবার দোকান এবং স্থানীয় হস্তশিল্প বিক্রির স্টল। ফলে একদিকে যেমন আমরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি অন্যদিকে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে স্থানীয়দের জন্য।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আলমগীর হোসেন বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাসমান পেয়ারা বাজারের ভিডিও দেখে আগ্রহ জন্মায়। এখানে এসে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। নৌকায় বসে চারদিকে সবুজ পেয়ারা বাগান আর পাখির ডাক শুনে মনটাই ভালো হয়ে যায়। এটা বাংলাদেশের এক অনন্য সৌন্দর্য। এমন জায়গা আরও যত্ন সহকারে রক্ষা করা দরকার।
পর্যটকদের নিরাপত্তা,পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। পর্যটক, বাগান মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধার্থে গত সপ্তাহে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নৌকা চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।
এতে বাগান এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে পাশাপাশি স্থানীয়দের আয়ের নতুন দ্বারও খুলে যাচ্ছে এই পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে।