ঢাকা, ১৫ মে, ২০২৫ (বাসস) : পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ (পিআরআই) আজ একটি উপস্থাপনা ও নীতি আলোচনার মাধ্যমে মাসিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক দূরদৃষ্টি (এমএমআই) এর উদ্বোধনী সংস্করণ প্রকাশ করেছে।
অস্ট্রেলিয়ান ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) এর সহায়তায় পিআরআই এর সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস (সিএমইএ) একটি নতুন উদ্যোগ নিয়ে এমএমআই তৈরি করেছে।
পিআরআই এর চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের উপ প্রধান ক্লিনটন পবকে এবং দ্বিতীয় সচিব জশুয়া গ্যাকুটান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই-এর চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার এবং প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, "বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ইতিহাসে দেখা গেছে যে, নীতিগত সমন্বয় এবং শক্তিশালী সামাজিক পুঁজির সমন্বয়ে জাতিগুলি টেকসই উন্নয়ন অর্জন করে। বাংলাদেশকে উভয়কেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে তার নীতিগুলিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নানা চ্যালেঞ্জ অনিবার্য হলেও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ আমাদের যাত্রাপথ পুনর্মূল্যায়ন, অতীতের ভুল পদক্ষেপ থেকে শিক্ষা নেওয়ার এবং নতুন কৌশলগত স্পষ্টতা ও সংকল্পের সাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ প্রদান করে।"
ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, "বিনিময় হার উদারীকরণ বাংলাদেশকে একাধিক দিক থেকে উপকৃত করবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ফ্লোটিং রেট চালু হওয়ার পরেও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমান রিজার্ভ, চলতি হিসাবের উন্নতি এবং সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্য বিবেচনা করে, আমরা যেকোনো সম্ভাব্য বিনিময় হারের অতিরিক্ত ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য ভাল অবস্থানে আছি। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আমি আশাবাদী।"
ক্লিনটন পবকে এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন: "প্রমাণ-ভিত্তিক নীতি সংলাপ বৃদ্ধি ও আরও কার্যকর করা, সময়োপযোগী নীতি নির্ধারণে অবদান রাখার প্রচেষ্টায় সহায়তা প্রদান করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমি পিআরআই-এর প্রশংসা করি সামষ্টিক অর্থনৈতিক তথ্য, কঠোর বিশ্লেষণ এবং প্রভাবশালী উপস্থাপনা একত্রিত করার জন্য যা অর্থপূর্ণভাবে তথ্যবহুল ও নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে।"
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে, ড. জাইদি সাত্তার উলে¬খ করেছেন যে, চলতি বছরে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং অর্থনীতি উচ্চতর প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমাদের রপ্তানি সম্ভাবনা একটি সুরক্ষামূলক শুল্ক ব্যবস্থার দ্বারা প্রভাবিত যা নীতিগত প্রণোদনাগুলিতে রপ্তানি-বিরোধী পক্ষপাত তৈরি করে।
ড. আশিকুর রহমান আরও বলেন, "বহিরাগত ভারসাম্য ক্রমশ: উন্নত হলেও রাজস্ব দুর্বলতা চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ভঙ্গুর করে তুলছে। তবে, এনবিআর ভেঙে দেওয়া এবং পৃথক রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ তৈরি করা একটি অগ্রসর পদক্ষেপ। নতুন ব্যাংক অধ্যাদেশ দুর্বল আর্থিক খাত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করবে।"
এমএমআই-এর মার্চ সংস্করণে যেসব গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন তুলে ধরা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সামান্য প্রত্যাবর্তন, ক্রমাগত মূল্যস্ফীতির চাপ, শক্তিশালী রপ্তানি কর্মক্ষমতা ও শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে বহিরাগত খাতে অগ্রগতি। তবে, এটি রাজস্ব সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ এবং চক্রাকারে ব্যয়ের ক্ষেত্রে সীমিত আর্থিক সুযোগকেও তুলে ধরে।