শেয়ারবাজারের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা এসেছে ওয়াল স্ট্রিটে পুনরুদ্ধারের প্রেক্ষিতে, যেখানে মুডি’স যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিপল-এ ক্রেডিট রেটিং বাতিল করার পর, সাময়িক পতনের মধ্যেও বাণিজ্য আলোচনার আশায় বিনিয়োগকারীরা আবারও শেয়ার কিনতে শুরু করেন।
চীন-মার্কিন বাণিজ্যচুক্তির প্রভাব:
ডোনাল্ড ট্রাম্পের লিবারেশন ডে’র শুল্ক আরোপ বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। তবে গত সপ্তাহে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে হওয়া সমঝোতায়, দ্বিপাক্ষিক শুল্ক অনেকটাই কমানো হয়েছে- যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।
ট্রাম্প তার সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপগুলো জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন এবং এখনো খুব বেশি দৃঢ় চুক্তি না হলেও সংকটের সবচেয়ে খারাপ সময়টি পার হয়ে গেছে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুদের হার বিষয়ে ফেডের অবস্থান:
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এ বছর দুইবার সুদের হার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ফেডারেল রিজার্ভের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা প্রকাশ করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফিলিপ জেফারসন ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মূল্যবৃদ্ধি যাতে স্থায়ীভাবে গেঁথে না যায়, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এ বছর দুইবার সুদের হার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক ফেডের প্রধান জন উইলিয়ামস ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফিলিপ জেফারসন এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা প্রকাশ করেছেন।
প্রাথমিক লেনদেনে হংকং, সাংহাই, টোকিও, সিডনি, সিউল, সিঙ্গাপুর, তাইপেই, ওয়েলিংটন ও জাকার্তার বাজারগুলো সবই ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
চীনের সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ:
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দুইটি প্রধান সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তখনই এই উত্থান লক্ষ্য করা যায়। দেশটি দীর্ঘমেয়াদী অভ্যন্তরীণ ব্যয়ের স্থবিরতা ও সম্পত্তি খাতে দীর্ঘদিনের ঋণ সংকট এবং উচ্চ যুব বেকারত্বের মতো চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, যেগুলো মোকাবিলায় কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘পিপলস ব্যাংক অফ চায়না’ এক বছরের ঋণ প্রাইম রেট (এলপিআর), ৩.১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.০ শতাংশ করেছে। যা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পরিবারের জন্য ঋণের সবচেয়ে সুবিধাজনক মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, বন্ধকী ঋণের জন্য ব্যবহৃত পাঁচ বছরের এলপিআর ৩.৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দুইটি হারই সর্বশেষ গত অক্টোবরে রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামানো হয়েছিল।
ভোক্তাদের আস্থার সংকট:
এই পদক্ষেপটি এসেছে এমন একদিন পর, যখন প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে যে এপ্রিল মাসে চীনের খুচরা বিক্রি প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে যে, ভোক্তাদের মধ্যে আস্থার অভাব এখনো অব্যাহত রয়েছে।
সিএটিএল-এর রেকর্ড আইপিও:
হংকংয়ে, চীনা ব্যাটারি নির্মাতা জায়ান্ট সিএটিএল-এর শেয়ার বাজারে আসার প্রথম দিনেই ১৩ শতাংশেরও বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। সংস্থাটি এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাথমিক পাবলিক অফার আইপিও এর মাধ্যমে ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে।
সিএটিএল বিশ্বে বিক্রি হওয়া এক-তৃতীয়াংশ বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরি করে। জানুয়ারিতে মার্কিন তালিকায় ‘চীনা সামরিক সংস্থা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পরও এর আইপিওতে তীব্র চাহিদা দেখা যায়।