ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ১৯শতাংশ শুল্ক আরোপের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র

বাসস
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:১৩

ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার জানান, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পণ্য ক্রয় করতে সম্মত হয়েছে। এই আলোচনার মাধ্যমে পূর্বে ঘোষিত উচ্চ হারের শুল্ক এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানানিয়েছেন যে ইন্দোনেশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এটি পূর্বঘোষিত ৩২ শতাংশ শুল্কের তুলনায় অনেক কম।

তিনি লিখেন, ’এই চুক্তির অংশ হিসেবে, ইন্দোনেশিয়া ১৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন জ্বালানি, ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য এবং ৫০টি বোয়িং জেট (যার মধ্যে অনেকগুলো ৭৭৭ মডেল) কিনতে সম্মত হয়েছে।’ ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর বোয়িং শেয়ারের দাম ০.২ শতাংশ কমে যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুল্ক বসানোর হুমকি দেওয়ার পর অনেক দেশ এখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। এজন্য ট্রাম্প আগে অনেক চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তার সরকার সেগুলো থেকে সরে আসার চাপের মধ্যে পড়েছে।  তবে  ট্রাম্প এখনও পর্যন্ত ব্রিটেন এবং ভিয়েতনামের সাথে অন্যান্য চুক্তি প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি চীনের সাথে পারস্পরিক শুল্ক কমানোর সাময়িক চুক্তি প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

তবে মঙ্গলবার ঘোষিত নতুন ১৯ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার তারিখ এখনো নির্দিষ্ট নয় এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রতিশ্রুত কেনাকাটাগুলো কত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে তাও স্পষ্ট নয়।

ট্রাম্প বলেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে আলাপের পর চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, যারা উচ্চ শুল্ক এড়াতে পণ্য রপ্তানিতে ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, আরও কয়েকটি চুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে।

ইন্দোনেশিয়ার সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিনো পাটি জালাল মঙ্গলবার এক ফোরেন পলিসি অনুষ্ঠানে বলেন, সরকার সূত্রে জানা গেছে তারা নতুন চুক্তি নিয়ে সন্তুষ্ট।

শুল্কের কৌশল

ট্রাম্প এপ্রিল মাসে প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের পণ্যে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেন এবং জানিয়েছিলেন, পরবর্তীতে অনেক দেশের জন্য এই হার আরও বাড়ানো হবে, যার মধ্যে ইইউ ও ইন্দোনেশিয়াও ছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কিছুদিন আগে, জুলাই ৯ থেকে তা পিছিয়ে আগস্ট ১ করা হয়। যা ছিল দ্বিতীয়বার সময় বাড়ানো।

এরপর থেকে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন, জানিয়ে দিচ্ছেন তাদের জন্য নির্ধারিত শুল্ক হার। এখন পর্যন্ত ২০টিরও বেশি দেশ যেমন ইইউ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়া এই ধরনের চিঠি পেয়েছে।

কানাডা ও মেক্সিকো যারা আগে এই ’পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় ছিল না, তারাও নতুন শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে উত্তর আমেরিকান বাণিজ্য চুক্তির অধীনে প্রবেশ করা পণ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান অব্যাহতি বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই ব্যাপক শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য হলো মার্কিন ব্যবসার ওপর বিদেশি বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, যদি বাণিজ্য চুক্তিগুলো না হয়, তবে জনগণ মনে করতে পারে যে ট্রাম্পের বাণিজ্য কৌশল ব্যর্থ হয়েছে।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র উপদেষ্টা উইলিয়াম রেইনশ এএফপিকে বলেন , ‘জনসাধারণের দৃষ্টিতে শুল্ক মানে ভোগান্তি, আর চুক্তি মানে লাভ। যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে মানুষ ধরে নেবে তার কৌশল ব্যর্থ ছিল’।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৫৫ জনকে পুশইন
আহত ছাত্রদল নেতা অভি'র পাশে তারেক রহমান
প্রথমবারের মত শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ১৩৩ রানের টার্গেট দিল শ্রীলংকা
অস্ত্রোপচারের কারনে তিন মাস মাঠের বাইরে বেলিংহাম
প্রথমবারের মতো দূর নভোমণ্ডলে সৌরজগতের জন্ম প্রত্যক্ষ করলেন জ্যোতির্বিদরা
জুলাই গণহত্যার কুশীলবদের বিচার চলতি বছরে শেষ হবে, আশাবাদ চিফ প্রসিকিউটরের
গোপালগঞ্জে আগামীকালের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের উপর হামলার প্রতিবাদে মাদারীপুরে বিক্ষোভ
১০