ঢাকা, ৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : আওয়ামীপন্থি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রের ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, ‘এটি কোনো সমন্বয়ক বা জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ভিডিও নয়; বরং চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র ও মাদকের ভিডিও।’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়, সেনাবাহিনী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ স্থানীয় সমন্বয়ক এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের আটক করেছে।
তবে বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওতে যাদের আটক দেখানো হয়েছে তারা কেউই সমন্বয়ক বা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত নন। বরং তারা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং আওয়ামী লীগপন্থি বলে বাংলাফ্যাক্টকে নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
ভিডিওতে থাকা ‘মোহনা টিভি’ লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ৫ জুলাই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। একই বিষয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও সেদিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ৪ জুলাই রাতে গোবিন্দগঞ্জ শহরের বুজরুক বোয়ালিয়া এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। স্থানীয় আজাদ মণ্ডলের বাসা ও ‘ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের অফিস থেকে ৩৬টি রামদা, ৪টি হাতকুড়াল, ১টি খেলনা পিস্তল, ৯টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ, নগদ ৬ হাজার ৪৫৮ টাকা ও ৩৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ সময় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, আজাদ মণ্ডল (৩৫), মোশাররফ হোসেন (৩৩), আশাদুল ইসলাম (৪২) ও মেহেদী হাসান (২৫)।
বেশিরভাগ গণমাধ্যম গ্রেফতারদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ না করেনি। তবে দেশ রূপান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় ছিলেন।
বাংলাফ্যাক্টের পক্ষ থেকে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং তারা আওয়ামী লীগ ঘরানার।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাংলাদেশে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণকে সঠিক তথ্য জানানোর দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।