বাসস
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:০২
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:০১

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খুলনাকে হারিয়ে ফাইনালে চট্টগ্রাম

ঢাকা, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : শেষ ওভারে ১৫ এবং শেষ বলে ৪ রানের সমীকরণ মিলিয়ে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফাইনালে উঠলো চট্টগ্রাম কিংস। আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে চট্টগ্রাম কিংস ২ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্সকে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিপিএলের ফাইনালে উঠলো চট্টগ্রাম। এর আগে ২০১৩ সালে ফাইনালে উঠলেও, রানার্স-আপ হয়েছিলো চট্টগ্রাম। 

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি বিপিএলের ফাইনালে ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১১ রানে ২ উইকেট হারায় খুলনা। তৃতীয় ওভারে ব্যক্তিগত ২ রান করে চট্টগ্রামের শ্রীলংকান পেসার বিনুরা ফার্নান্দোর বলে বোল্ড হন খুলনার অধিনায়ক ও ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ। পরের ওভারে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স রসকে খালি হাতে বিদায় দেন স্পিনার আলিস আল ইসলাম।   

শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও আফিফ হোসেন। তৃতীয় উইকেটে ২৩ বলে ২৩ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে নাইমকে (১৯)বিদায় দেন পেসার খালেদ আহমেদ। ২২ বল খেলে ৪টি চার মারেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাইম।

নবম ওভারে সাজঘরে ফিরেন আফিফও। ১৪ বলে ৮ রান করে স্পিনার আরাফাত সানির শিকার হন আফিফ। এতে ৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা।

এ অবস্থায়  দলের বড় জুটির প্রত্যাশা মিটিয়েছেন উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও হেটমায়ার। উইকেটে দ্রুত সেট হয়ে রানের গতি বাড়ান তারা। ১৭তম ওভারে ২৩ রান নিয়ে দলের স্কোর ১শতে পৌঁছে দেন মাহিদুল-হেটমায়ার।

১৮তম ওভারের প্রথম বলে মাহিদুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩২ বলে ৪১ রান করেন মাহিদুল। পঞ্চম উইকেটে ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন মাহিদুল-হেটমায়ার।  

সতীর্থকে হারালেও, দ্রুত তোলার কাজ দায়িত্ব নিয়েই  সেরেছেন হেটমায়ার। ৮ বলের ব্যবধানে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ রান তুলেন তিনি। এরমধ্যে ১৯তম ওভারের প্রথম চার বলে ২০ রান নেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। ২৯ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৬৩ রানে আউট হন হেটমায়ার। তার ৩৩ বলের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি ছিলো।

দলীয় ১৪৬ রানে হেটমায়ার ফেরার পর শেষ ৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৭ রানের জুটি গড়ে খুলনাকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন জেসন হোল্ডার ও মোহাম্মদ নওয়াজ। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান করে খুলনা। ১টি করে চার-ছক্কায় ৫ বলে অপরাজিত ১২ রান করেন হোল্ডার। ১টি বাউন্ডারিতে ২ বলে ৫ রান করেন নওয়াজ।

চট্টগ্রামের ফার্নান্দো ২টি, শরিফুল-আলিস-খালেদ ও সানি ১টি করে উইকেট নেন।

১৬৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৩৫ রানে ২ উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ৪ রান করে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও ইংল্যান্ডের গ্রাহাম ক্লার্ক।

তৃতীয় উইকেটে ৪৮ বলে ৭০ রান যোগ করে চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে রাখেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার খাজা নাফি ও হুসেইন তালাত। নাফি ৪৬ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রানে আউট হন। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ৪০ রানে থামেন তালাত।

১১৭ রানের মধ্যে তাদের বিদায়ের পর হারের শঙ্কায় পড়ে চট্টগ্রামের। তবে সপ্তম ও অষ্টম উইকেট জুটি থেকে ২৪ বলে ৩৯ রান এলে, লড়াইয়ে টিকে থাকে চট্টগ্রাম। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রান দরকার পড়ে তাদের।

খুলনার পেসার মুশফিক হাসানের করা শেষ ওভারের প্রথম চার বলে ২টি চারে ১১ রান পায় চট্টগ্রাম। পঞ্চম বলে শরিফুল আউট হলে, শেষ বলে ৪ রান দরকার পড়ে তাদের।

শেষ বলে চার মেরে চট্টগ্রামকে স্মরনীয় জয় এনে দেন আলিস। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ২টি বাউন্ডারিতে ১৩ বলে ১৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন সানি। খুলনার হাসান ও মুুশফিক ৩টি করে উইকেট নেন।