বিশ্বব্যাপী বাড়ছে টিকায় প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাব: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

বাসস
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : হামের মতো টিকায় প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী বাড়ছে বলে বুধবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘ ও গ্যাভি টিকা জোট। ভুল তথ্য ও আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে তারা জানিয়েছে।

জাতিসংঘ থেকে এএফপি জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গত পাঁচ দশকে টিকা ১৫ কোটি প্রাণ রক্ষা করেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন কমে যাওয়ায় এই অর্জনগুলো এখন হুমকির মুখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যেসব রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে, তা মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলছে এবং রোগ প্রতিরোধে ব্যয় বাড়াচ্ছে।’

বিশেষ করে হাম নতুন করে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ২০২১ সাল থেকে প্রতি বছরই এর সংক্রমণ বেড়েছে। ২০২৩ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় আনুমানিক ১ কোটি ৩ লাখে—যা ২০২২ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

সংস্থাগুলোর মতে, এই প্রবণতা ২০২৪ ও ২০২৫ সালেও অব্যাহত থাকতে পারে।

গত ১২ মাসে ১৩৮টি দেশ হাম আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি দেশে বড় আকারে বা ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে—২০১৯ সালের পর এটি এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের (২৪-৩০ এপ্রিল) শুরুতে বুধবার যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তাতে স্বাক্ষর করেছে ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ ও গ্যাভি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে আফ্রিকায় মেনিনজাইটিস ও ইয়েলো ফিভারের সংক্রমণও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

এই সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে ভুয়া তথ্যের বিস্তার, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মানবিক সংকট।

অন্যদিকে, অর্থায়ন কমে যাওয়ায় অগ্রগতি ঝুঁকিতে পড়েছে এবং লাখো শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। যদিও এতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় মানবিক সহায়তার বড় ধরনের কাটছাঁটের বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।

ইউনিসেফ প্রধান ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আমরা বর্তমানে হামের টিকা দিতে পারছি না ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুকে, যারা সহিংসতা ও অস্থিরতায় জর্জরিত এলাকায় বাস করছে।’

কোভিড-১৯ মহামারির পর দেশগুলো টিকাদানে ঘাটতি পূরণে চেষ্টা করলেও, নিয়মিত টিকা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

২০২৩ সালে আনুমানিক ১ কোটি ৪৫ লাখ শিশু একটিও নিয়মিত টিকা পায়নি, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৬ লাখ বেশি।

এই প্রেক্ষাপটে গ্যাভি আগামী ২৫ জুনের অঙ্গীকার সম্মেলনের আগে অন্তত ৯ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন আহ্বান করেছে, যাতে ২০২৬-২০৩০ মেয়াদে ৫০ কোটি শিশুকে রক্ষা করে অন্তত ৮০ লাখ প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অস্ট্রেলিয়া কৌশলগত রিজার্ভ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ মজুদ করবে
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে পোল্ট্রি বর্জ্যে নদের জল দূষিত, বাড়ছে রোগব্যাধি
পরিবেশবান্ধব লিচুর ফলছেদক পোকা দমনে সফল হাবিপ্রবি
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভে দুইজন নিহত, আহত ৫৪: নগরীর মেয়র
প্রধান উপদেষ্টা কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তিন শূন্য’ তত্ত্ব বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন
রংপুর বেড়েছে পেঁয়াজ রসুনসহ কিছু সবজির দাম
প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকবেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম
গাজীপুরে ২৮ জন ওএমএস ডিলার নিয়োগ
নাটোরে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু
তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে প্রধান বিচারপতি 
১০