শিরোনাম
ঢাকা, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি গ্রামে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন। বিদ্রোহী গোষ্ঠি ও স্থানীয় একটি দাতব্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
গত বুধবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে রাখাইন রাজ্যে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রামরি দ্বীপের খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তাদের কিয়াউক নি মাও নামে একটি গ্রামে বিমান চালিয়েছে সামরিক জান্তা। হামলার ব্যাপারে সেনাবাহিনী আগে থেকে কোনো ঘোষণা দেয়নি।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা জানিয়েছেন, যুদ্ধ বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এতে আগুন লেগে ৫ শতাধিক বাড়ি ঘর পুড়ে গেছে। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আরো ২০ জন আহত হয়েছেন।
খাইং থুখা বলেছেন, ‘নিহতরা সবাই বেসামরিক নাগরিক। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু ও রয়েছে।’ গণমাধ্যম ও বিমান হামলা এবং হতাহতের খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারে ২০২১ সালে বেসামরিক সরকার উৎখাত করে সামরিক শাসন জারি করা হয়। এরপর থেকেই ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়।
জান্তাবিরোধী ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের’ একটি হলো আরাকান আর্মি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীটি। এতে চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় তারা। গোষ্ঠিটি সম্প্রতি রাখাইনের বেশিরভাগ অঞ্চলসহ বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
গত বছরের মার্চ মাসে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৩শ’ ৪০ কিরোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রাখাইনের রামরি দখল করে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। হাত ছাড়া এসব এলাকা পুনরুদ্ধারে বিমান হামলা জোরদার করেছে সামরিক জান্তা।
রাখাইনের পূর্ব নাম ছিল আরাকান। ২০১৭ সালে এই অঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস সামরিক অভিযান ও গণহত্যার মুখে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
অঞ্চলটির বেশিরভাগই এখন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে একটি ‘স্বাধীন রাষ্ট’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় গোষ্ঠিটি।